পলিয়ার ওয়াহিদ
চোখকান যাদের গাঁধার মতো আধখোলাও ছিল তারা জানেন বসুন্ধরা গ্রুপের সবগুলো মিডিয়া উঠে-পড়ে লেগেছিল ইউএসবাংলা গ্রুপের বিরুদ্ধে। অন্যদিকে ইউএসবাংলার মিডিয়া ঢাকাপোস্ট আজ সুযোগ পেলেও কিংবা মানবিক কারণে হলেও একজন বালিকার পক্ষে একটিও নিউজ করতে পারিনি!
বিষয়টি যদি ইট মারতে পাটকেল নিক্ষেপ না হয় তাইলে দারুণ খবর! কিন্তু সাদাচোখে একটু তাকান। চিন্তকরা হয় তো ভাবছেন তাদের মধ্যে একটা আপোষের রাস্তা ইতিমধ্যে তৈরি হয়ে গেছে। তাহলে বসুন্ধরা গ্রুপের কালেরকন্ঠ, ডেইলি সান, বাংলাদেশ প্রতিদিন, বাংলানিউজ, নিউজ টোয়েন্টিফোর, এফএম রেডিওসহ আর যত মিডিয়া আর ইউএসবাংলা গ্রুপের সদ্য প্রকাশিত ও সাড়াজাগানো ঢাকা পোস্ট ও প্রকাশিতব্য আজকের পত্রিকার চরিত্র আমাদের কাছে পরিস্কার। সাদা ও শাদা ভিন্ন দেখতে ও আলাদা বানান হলেও যেমন বিধবার দৃশ্য সামনে নিয়ে আসে তারাও সেটা করে দেখালো।
এসব দিন আমাদের নিশ্চয় খোদাই করে রাখতে হবে। গণিতের ভাষায় বলতে হবে প্রমাণিত সত্য যে, আমাদের আর সত্য বলবার ক্ষমতা নেই! এবার আসেন আরেকটা জনপ্রিয় পত্রিকা দেশ রূপান্তরও কোনো সংবাদ প্রকাশ করিনি! ভাবছেন তারা আবার কারা? তারাও বসুন্ধরার মাসতুতো ভাই। যাক বাঁচা গেল!
তাহলেও সমস্যা নাই। বাংলাদেশে এই গণমাধ্যম আকালেও সৎ ব্যবসায়ী লতিফুর রহমানের প্রথম আলোর মতো আর দুটো মিডিয়া থাকলে অন্য মিডিয়া হাউজগুলোর প্রয়োজনীয়তা কতটা থাকতো সে উত্তর আপনাদের হাতে দিলাম। কারণ সকলে জানেন সম্পাদক মতিউর রহমান নিজের বিরুদ্ধে করা সংবাদ খুব সম্মান করে সংবাদকে সংবাদের মর্যাদা দিয়ে প্রথম পাতা কিংবা শেষ পাতায় ছাপেন।
বিডিনিউজও ভালো পারফর্ম দেখিয়েছে মুনিয়াকাণ্ডে। তারা যদিও দীর্ঘদিন একটা নানাবিধ জাতাকলে পিষ্ট! তাদের নিরপেক্ষ হওয়া তাই আরও বেশি প্রয়োজন। বাংলা ট্রিবিউন দ্য গ্রেট।
এবার আসেন, যারা আজ মুনিয়াকাণ্ডে খুব মানবিক হলেন তারা কিন্তু রিসোর্ডকাণ্ডে খুব অমানবিক হয়ে উঠছিল! কিংবা আজ যারা হত্যার নিউজ করার সাহস পাননি তারাই রসিয়ে রসিয়ে নিউজ করেছে। ফলে বিচার করতে হবে নানান দিক দিয়ে। পর্যালোচনা করতে হবে ইতিহাস দিয়ে। ভুল পথে হাঁটা গণমাধ্যম অনেক আগেই ব্যক্তিমাধ্যমে রূপান্তর হয়ে গেছে। এখন তাইলে পথ? মনে রাখবেন পথ একটা বন্ধ হলে দশটা খুলে যাবে। হতাশ হবেন না। প্রাকৃতিকভাবে সব ঘটনা স্বাভাবিক হলেও প্রকৃত ঘটনা সবসময় স্বাভাবিক নয়। তাই এসব আলাপ।
আরেকটু বলা দরকার। কারণ আপনারা হয়তো এসব মিডিয়ার সম্পাদকদের ভালো করে চেনেন না। সাংবাদিকরা যেখানে সবচেয়ে মানবিক হওয়ার কথা বা যারা মুখে মানবিকতার গল্প বলতে বলতে অমানবিক আচরণ করছেন তাদের চেহারাগুলোও চিনে রাখা জরুরি। নঈম নিজাম এক্ষেত্রে সবার আগে আলোচিত সম্পাদক।
তিনি সবচেয়ে বেশি প্রচারিত দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক। সাথে সাথে নিউজ টোয়েন্টিফোরের সিইও। কবি জুয়েল মাজহার বাংলানিউজের সম্পাদক। কবিরা নিরীহ প্রাণী। তাদের মাফ করে দিবেন? কালেরকন্ঠের সম্পাদক নামীদামী ও জনপ্রিয় লেখক ইমদাদুল হক মিলন। অনেকে এবার জিহবায় কামড় দিবেন হয় তো! ছিঃ ছিঃ বলবেন অনেকে। কিন্তু না উনারা আসলে চাকরি করেন।
পেটের জন্য চ্যাট তাই জলঞ্জলি দিতেই পারেন! দেশ রূপান্তরের অমিত হাবীবকে ভিন্নধাতুর মনে হলেও লোহা যে নিদিষ্ট তাপে গলে যাবে তা জানার জন্য কাউকে বিজ্ঞানের জ্ঞান না থাকলেও চলে। আর এসব অফিসগুলোতে অসংখ্য মানবিক, দরদি ও প্রেমিক লেখক, চিন্তক, কবি, মানবতাবাদি আছেন যারা নিজেদের ফেসবুকে পর্যন্ত পরাধীন। রিজিকের মালিক যদি মহাজন হয় তাহলে এসব বুদ্ধি মালিকরা চিরকার হৃদয়ের কাছে প্রতিবন্ধী হিসেবে বেঁচে থাকবেন হয়তো একথা হলফ করে বলা যায়। তবু তাদেরকে আমরা পরজীবী বুদ্ধির জন্য বেঁচে থাকার আকুতি জানাই।
এবার যদি মিডিয়াগুলোর আড্ডাখানা প্রেসক্লাবের নেতাদের দিকে চোখমারি তাইলে আরও ভিমরি খাবেন। সভাপতি কে? তিনি কার পরিচিত? এভাবে প্রত্যেকটি জায়গা পুঁজি ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে কুক্ষিগত করে রাখা হয়েছে। যেখানে সরকার অপরাধী, আইন তো অন্ধ, বিচার বিভ্রান্ত, বিরোধী দল চোগলখোর সেখানে আমরা ডাঙ্গায় আর জলে বসবাস করছি। বাঘ আর কুমির সময়ে আপনিও নননিরপেক্ষ! ফলে আসেন সবাই কান্নাকাটি করি আর করোনা আক্রান্ত হয়ে মরে যাই। এর চেয়ে ভালো ফায়সালা যদি থাকে তাইলে আপনারা মতামত দিতে পারেন। আমি আপনাদের সঙ্গে আছি।
এসব ঘটনার পিছনে আরও ঘটনা আছে সেসব কথা আপনাদের না জানলেও চলবে। আপাতত সেহরির প্রস্তুতি নেন কাল ইফতারে দোয়া কইরেন। মনে রাখবেন যারা বাঁচার জন্য পালাই মৃত্যু তাদের পিছু নেয়। আর যারা মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত জীবন তাদের হাতছানি দেয় বাঁচার! ধানুশের আশুরান, বিক্রমের মিঠামাগান আর আনু সিতারার নেয়ূম নেয়ামুলের যারা দর্শক তারা জানেন মৃত্যু আর আত্মসম্মানের সঙ্গে কুস্তি ও কুলিকুলির নামই জীবন।
অসমাপ্ত লেখা। ছবিতে বাংলাদেশের দৈনিক পর্ণ, সম্মানী, নামী, পদধারী, জ্যাঁদরেল, ফাপরবাজ, দালাল, প্রতিবন্ধী, সরকারী, ভীতু ও বাঘ সম্পাদকবৃন্দ
(সমগ্র বাংলার সম্পাদকীয় নীতিমালার সঙ্গে লেখকের মতামতের মিল নাও থাকতে পারে। প্রকাশিত লেখাটির আইনগত, মতামত বা বিশ্লেষণের দায়ভার সম্পূর্ণরূপে লেখকের, সমগ্র বাংলার কর্তৃপক্ষের নয়। লেখকের নিজস্ব মতামতের কোনো প্রকার দায়ভার সমগ্র বাংলা নেবে না।)