1. mahfujpanjeree@gmail.com : Mahfuzur-Rahman :
  2. admin@samagrabangla.com : main-admin :
  3. mahmudursir@gmail.com : samagra :

মুসলিমেরা নামাজে যা বলে! যা অন্তরে খুশু ও বিনম্রভাব সৃষ্টি করে।

  • Update Time : বুধবার, জুলাই ১, ২০২০

 – নামাজ আদায়ে ইচ্ছুক মুসলিস ব্যক্তি কেবলামুখী হয়ে দাঁড়িয়ে মহান আল্লাহ তাআলার সামনে নিছের অনুভূতি গুলো হৃদয়ে জাগ্রত করে। অন্তরে খুশু ও বিনম্রভাব সৃষ্টি করে। – এরপর অন্তরে নামাজের নিয়ত করে। তারপর

– দু হাত কাঁধ বরাবর অথবা কান বরাবর উঠাইয়া বলে, «আল্লাহু আকবার»এর অর্থ: আল্লাহ সর্বশ্রেষ্ঠ।

– এরপর ডান হাত দিয়ে বাম হাতের কব্জিতে ধরে অথবা ডান হাত বাম হাতের ওপর রাখে, কেহ তা নাভির নিচে অথবা বুকের ওপরে রাখে।

এর পর তারা অনুচ্চৈঃস্বরে ছানা পাঠ করে: «ছানা» এর আরবি উচ্চারণ———————

উচ্চারণ : ‘সুবহানাকাল্লাহুম্মা ওয়াবি হামদিকা ওয়া তাবারা কাসমুকা ওয়া তাআলা জাদ্দুকা ওয়া লা ইলাহা গাইরুকা।’

«ছানা» এর অর্থ : হে আল্লাহ! আমরা তোমারই পবিত্রতা ও প্রশংসা বর্ণনা করছি, তোমার নামই বরকতপূর্ণ এবং তোমার গৌরবই সর্বোচ্চ, তুমি ছাড়া অন্য কোনো উপাস্য নেই।

এরপর অনুচ্চৈঃস্বরে আউজু বিল্লাহ (আউজু বিল্লাহি মিনাশ্ শাইত্ব-নির-রাজিম এর অর্থ:বিতাড়িত শয়তানের কুমন্ত্রণা হতে আমি আল্লাহ্তায়লার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করিতেছি।)। এরপর বিসমিল্লাহ (بِسْمِ ٱللَّٰهِ ٱلرَّحْمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ :বিছমিল্লাহির রাহমা-নির রাহীম এর অর্থ: পরম করূণাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহ তা‘য়ালার নামে (আরম্ভ করিলাম)।) পড়ে।

এবার সুরা ফাতিহা তিলাওয়াত করে। ১. ٱلْحَمْدُ لِلَّٰهِ رَبِّ ٱلْعَالَمِينَআলহামদুলিল্লা-হি রাব্বিল আ-লামীন। ২:সমস্ত প্রশংসা জগতসমূহের প্রতিপালক আল্লাহের জন্যে।

3. ٱلرَّحْمَٰنِ ٱلرَّحِيمِআর রাহ মা-নির রাহীম।৩:অনন্ত দয়াময়, অতীব দয়ালু।4. مَالِكِ يَوْمِ ٱلدِّينِমা-লিকি ইয়াওমিদ্দীন।৪:ন্যায় দিবসের মালিক।5. إِيَّاكَ نَعْبُدُ وَإِيَّاكَ نَسْتَعِينُইয়্যা-কা না’বুদু ওয়া ইয়্যা-কানাছতা’ঈন।৫:আমরা শুধু আপনারই দাসত্ব করি এবং শুধু আপনারই নিকট সাহায্য কামনা করি।6. ٱهْدِنَا ٱلصِّرَاطَ ٱلْمُسْتَقِيمَইহদিনাসসিরা-তাল মুছতাকীম।৬:আমাদের সরল পথনির্দেশ দান করুন।7. صِرَاطَ ٱلَّذِينَ أَنْعَمْتَ عَلَيْهِمْ غَيْرِ ٱلْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ وَلَا ٱلضَّالِّينَসিরা-তাল্লাযীনা আন’আম তা’আলাইহীম। গাইরিল মাগদূ বি’আলাইহীম ওয়ালাদ্দাল্লীন। আমীণ।৭:তাদের পথে, যাদের আপনি অনুগ্রহ করেছেন, এবং তাদের পথে নয় যারা আপনার ক্রোধের শিকার ও পথভ্রষ্ট, আমীন

সুরা ফাতেহা এর অর্থ: সর্ববিধ প্রশংসাই আল্লাহর জন্য, যিনি বিশ্ব-ব্রহ্মান্ডের প্রতিপালক,সর্বদাতা, করুণাময়, বিচার দিবসের অধিপতি।আমরা তোমারই আরাধনা করিতেছি ও তোমারই নিকট সাহায্য প্রার্থনা করিতেছি। আমাদিগকে সরলপথ দেখাও, তাঁদের পথ, যাহাদের প্রতি তুমি অনুগ্রহ করিয়াছ; কিন্তু উহাদের পথ নয়, যাহারা অভিশপ্ত অথবা যাহারা পথভ্রষ্ট হইয়াছে। সুরা ফাতিহা পাঠ শেষ অনুচ্চৈঃস্বরে আমিন বলে।

সুরা ফাতিহা শেষ হলে একটি সুরা অথবা তিনটি ছোট আয়াত, যা কমপক্ষে লম্বা একটি আয়াতের সমতুল্য হয় এমন আয়াত পড়ে।

অতঃপর আল্লাহু আকবার বলে রুকুতে যায়। রুকুতে মাথা নিতম্বের বরাবর করে।

রুকুতে আঙুলগুলো ছড়িয়ে দিয়ে হাঁটুকে আঁকড়ে ধরে।

রুকুতে কমপক্ষে তিনবার ‘সুবহানা রাব্বিয়াল আজিম’ পড়ে। ছুবহানা রাব্বিয়াল আজিম এর অর্থ: আমার মহান প্রতিপালকের পবিত্রতা বর্ণনা করিতেছি।

এবার রুকু থেকে ‘সামিয়াল্লাহু লিমান হামিদাহ’ বলে মাথা ওঠায়। ছামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ এর অর্থ: যে কোন ব্যক্তি আল্লাহর প্রশংসা করে, আল্লাহ তাহা শ্রবণ করেন। মুক্তাদি হলে অনুচ্চৈঃস্বরে শুধু ‘রাব্বানা লাকাল হামদ’ বলে। রাব্বানা লাকাল হামদ এর অর্থ: হে আমার প্রতিপালক! সমস্ত প্রশংসা তোমারই জন্য। এরপর তাকবির তথা আল্লাহু আকবার বলে সিজদায় যায়।

সিজদায় যাওয়ার সময় প্রথমে হাঁটু, তারপর হাত, তারপর উভয় হাতের মাঝে কপাল মাটিতে রাখে। নিজের পেটকে রান থেকে এবং বাহুকে পার্শ্বদেশ থেকে পৃথক করে রাখে। হাত ও পায়ের আঙুলকে কিবলামুখী করে রাখে।

সিজদায় কমপক্ষে তিনবার ‘সুবহানা রাব্বিয়াল আলা’ পড়ে। ছূবহানা রাব্বিয়াল আ‘লা এর অর্থ: আমার শ্রেষ্ঠ প্রতিপালকের পবিত্রতা বর্ণনা করিতেছি।

এরপর সিজদা থেকে ওঠার সময় সর্বপ্রথম মাথা উঠিয়ে উভয় হাতকে রানের ওপর রেখে স্থিরতার সঙ্গে বসে পড়ে। এরপর তাকবির বলে দ্বিতীয় সিজদা করে। দ্বিতীয় সিজদায়ও কমপক্ষে তিনবার তাসবিহ পড়ে। অতঃপর জমিতে হাত দ্বারা ঠেক না দিয়ে এবং না বসে সরাসরি তাকবির বলে দাঁড়িয়ে যায়। এ পর্যন্ত প্রথম রাকাত সম্পন্ন করে।

এরপর দ্বিতীয় রাকাত শুরু হয়। এতে হাত উঠায় না, ছানাও পড়ে না, আউজু বিল্লাহও পড়ে না। তবে আগের মতো সুরা ফাতিহা ও সঙ্গে অন্য একটি সুরা পড়ে রুকু-সিজদা করে। দ্বিতীয় সিজদা শেষ করে ডান পা খাড়া করে বাঁ পা বিছিয়ে দিয়ে তার ওপর বসে। তখন তাদের হাত থাকে রানের ওপর এবং ডান পায়ের আঙুলগুলো রাখে কিবলামুখী।

অতঃপর নিম্নের তাশাহুদ পড়ে।

তাশাহুদের উচ্চারণ : ‘আত্তাহিয়্যাতু লিল্লাহি ওয়াস সালাওয়াতু ওয়াত তায়্যিবাত। আসসালামু আলাইকা, আইয়্যুহান্নাবিয়্যু ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ। আসসালামু আলাইনা ওয়া আলা ইবাদিল্লাহিস সালিহিন। আশহাদু আল-লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসুলুহ।’ ::::: আত্তাহিয়্যাতু এর অর্থ: সমস্ত সম্মান, সমুদয় ইবাদত এবং সমস্ত পবিত্র কাজ সবই আল্লাহ পাকের জন্য। হে নবী (সাঃ)! আপনার উপর আল্লাহর করুণা ও শান্তি বর্ষিত হোক। আমাদের উপর এবং আল্লাহর নেক বান্দাদের উপর শান্তি বর্ষিত হোক। আমি সাক্ষ্য দিতেছি যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন উপাস্য নাই। আরও সাক্ষ্য দিতেছি যে, নিশ্চয়ই মোহাম্মদ (সাঃ) আল্লাহর বান্দা ও রাসুল।

তাশাহুদ পড়ার সময় ‘আশহাদু আল-লা ইলাহা’ পড়ার সময় শাহাদাত আঙুল উঁচু করে ইশারা করে। আর ‘ইল্লাল্লাহু’ বলার সময় আঙুল নামিয়ে ফেলে।

যদি দুই রাকাতবিশিষ্ট নামাজ হয়, যেমন—ফজরের নামাজ ইত্যাদি, তাহলে তাশাহুদের পর নিম্নের দরুদ শরিফ পাঠ করে।

দুরুদ শরিফের উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদ  ওয়ালা আলি মুহাম্মদ, কামা সাল্লাইতা আলা ইবরাহিমা ওয়া আলা আলি ইবরাহিম। ইন্নাকা হামিদুম মাজিদ। আল্লাহুম্মা বারিক আলা মুহাম্মদ, ওয়ালা আলি মুহাম্মদ, কামা বারাকতা আলা ইবরাহিম, ওয়া আলা আলি ইবরাহিম, ইন্নাকা হামিদুম মাজিদ।

দুরূদ এর অর্থ: হে আল্লাহ! মোহাম্মদ (সাঃ) এর উপর ও তাহার বংশধরের উপর রহমত পাঠাও, যেরূপ রহমত ইব্রাহিম (আঃ) ও তাঁহার বংশধরের উপর পাঠাইয়াছিলে। নিশ্চয়ই তুমি প্রশংসনীয় ও জ্ঞানী। হে আল্লাহ! মোহাম্মদ (সাঃ) ও তাঁহার বংশধরের উপর বরকত পাঠও, যেরূপ বরকত ইব্রাহিম (আঃ) ও তাঁহার বংশধরের উপর পাঠাইয়াছিলে। নিশ্চয়ই তুমি প্রশংসনীয় অভিজ্ঞ।

এরপর পবিত্র কোরআন ও হাদিসে বর্ণিত যেকোনো দোয়া পাঠ করে।

যেমন—এই দোয়া সবাই পড়ে। এটাকে দোয়ায়ে মাসুরা বলা হয়।

উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি জালামতু নাফসি জুলমান কাসিরাও ওয়ালা ইয়াগফিরুজ জুনুবা ইল্লা আনতা, ফাগফিরলি মাগফিরাতাম-মিন ইনদিকা, ওয়ার হামনি ইন্নাকা আনতাল গাফুরুর রাহিম।’

দো‘আ মাসুরা এর অর্থ: হে আল্লাহ! নিশ্চয়ই আমি আমার নিজের উপর অধিকতর যুলুম করিয়াছি, তুমি ব্যতীত কেউই মাফ করিতে পারেনা। সুতরাং তুমি আমাকে সম্পূর্ণরূপে মাফ করো এবং দয়া করো। নিশ্চয়ই তুমি মার্জনাকারী ও অনুগ্রহকারী।

অথবা এই দোয়া পড়ে—উচ্চারণ : ‘রাব্বানা আতিনা ফিদ-দুনইয়া হাসানাহ, ওয়া ফিল আখিরাতি হাসানাহ, ওয়া কিনা আজাবান-নার।’

এরপর ‘আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ’ বলতে বলতে ডানে এবং বাঁয়ে মাথা ফেরায়। সালাম ফেরানোর সময় তাদের পাশের নামাজি ব্যক্তি এবং ফেরেশতাদের কথা স্মরণ করেনা। ছালাম এর অর্থ: আপনাদের উপর শান্তি ও আল্লাহর রহমত বর্সিত হউক।

যদি নামাজ তিন রাকাতবিশিষ্ট হয়, যেমন—মাগরিবের নামাজ, তখন প্রথম বৈঠকে তাশাহুদের পর আর কিছু পড়ে না। বরং ‘আল্লাহু আকবার’ বলে সোজা দাঁড়িয়ে যায়।

তবে তৃতীয় রাকাতে সুরায়ে ফাতিহা পড়ে।

আর নামাজ যদি চার রাকাতবিশিষ্ট হয়, যেমন—জোহর, আসর ও এশার নামাজ, তখন চতুর্থ রাকাতেও শুধু সুরায়ে ফাতিহা পড়ে। এরপর প্রথম দুই রাকাতের মতো রুকু-সিজদা করে দুই রাকাত সম্পন্ন করে শেষ বৈঠকে বসে। সেখানে উল্লিখিত পদ্ধতিতে তাশাহুদের পর দরুদ এবং এরপর দোয়ায়ে মাসুরা পড়ে সালাম ফেরায়।

বিতির নামাজে দো‘ আ কুনত পড়ে:

اَللَّهُمَّ اِنَّا نَسْتَعِيْنُكَ وَنَسْتَغْفِرُكَ وَنُؤْمِنُ بِكَ وَنَتَوَكَّلُ عَلَيْكَ وَنُثْنِىْ عَلَيْكَ الْخَيْرَ وَنَشْكُرُكَ وَلاَ نَكْفُرُكَ وَنَخْلَعُ وَنَتْرُكُ مَنْ يَّفْجُرُكَ-اَللَّهُمَّ اِيَّاكَ نَعْبُدُ وَلَكَ نُصَلِّىْ وَنَسْجُدُ وَاِلَيْكَ نَسْعَى وَنَحْفِدُ وَنَرْجُوْ رَحْمَتَكَ وَنَخْشَى عَذَابَكَ اِنَّ عَذَابَكَ بِالْكُفَّارِ مُلْحِقٌ

দো‘ আ কুনত এর উচ্চারণ:

আল্লাহুম্মা ইন্না নাস্তাঈনুকা, ওয়া নাস্তাগফিরুকা, ওয়া নু’মিনু বিকা, ওয়া নাতাওয়াকালু ‘আলাইকা, ওয়া নুছনী ‘আলাইকাল খাইরা, ওয়া নাশকুরুকা, ওয়ালা নাকফুরুকা, ওয়া নাখলাউ, ওয়া নাতরুকু মাঁই ইয়াফজুরুকা। আল্লাহুম্মা ইয়্যাকা না’বুদু ওয়া লাকানুসল্লী, ওয়া নাসজুদু, ওয়া ইলাইকা নাস’আ, ওয়া নাহফিদু, ওয়া নারজু রাহমাতাকা, ওয়া নাখশা আযাবাকা, ইন্না আযাবাকা বিল কুফ্ফারি মুলহিক্ক।

দো‘ আ কুনত এর অর্থ: হে আল্লাহ! নিশ্চয়ই তোমারই সাহায্য কামনা করি, তোমারই নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করি এবং তোমাকেই বিশ্বাস করি।তোমারই উপর ভরসা করি এবং তোমারই উত্তম প্রশংসা করি। আমরা তোমার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি, তোমার অবাধ্য নই, যারা তোমার অবাধ্য তাদের নিকট হতে দূরে থাকি। হে আল্লাহ! আমরা তোমারই ইবাদত করি, তোমারই সন্তুষ্টির জন্যে সালাত আদায় করি, একমাত্র তোমাকেই সিজদা করি এবং একমাত্র তোমারই আদেশ পালনে প্রস্তুত থাকি। আমরা তোমারই অনুগ্রহের প্রত্যাশী এবং তোমার শাস্তিকেই ভয় করি।ণিশ্চয়ই তোমার শাস্তি অবিশ্বাসীদের জন্যে নির্ধারিত।

তথ্যটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে শেয়ার করুন

More News Of This Category