June 8, 2023, 12:29 pm
ASLAM MAHMUD: মানুষ আসলে নিজে থেকেই কোন কিছু বিশ্বাস করে না। যতক্ষণ না, তার সেটার উপর কোন উপলব্ধি বা অনুভুতি না জন্মায়। আর না দেখে বিশ্বাস করাকেও অন্ধ বিশ্বাস বলা যাবে না। আর কেউ বিভিন্ন আলামত দেখে আল্লাহর অস্তিত্ব বিশ্বাস করলেও সেটাকে অন্ধ বিশ্বাস বলা যায় না। বরং যারা সত্য দেখেও বা উপলব্ধি করেও না দেখার বা না বুঝার ভান করে তারাই অন্ধবিশ্বাসী। সেটা নাস্তিক হোক বা আস্তিকই হোক। দুটাই সমান। Dose Allah expect us to have Blind faith? / Does Allah expect our blind faith? (আল্লাহ কি আমাদের অন্ধ বিশ্বাস আশা করেন?)
কিসের ভিত্তিতে মুসলিমরা আল্লাহকে বিশ্বাস করে তা জানার আগে জেনে নেই কেনো অবিশ্বাসীরা আল্লাহ তে বিশ্বাস করবে:-
দেখুন আপনি যদি বলেন। আপনি আল্লাহ কে দেখতে পান না। তাহলে আপনি কেন আল্লাহ কে বিশ্বাস করবেন -এর থেকে কুযুক্তি আর দ্বিতীয়টি নেই।
(১) আমি আপনি ব্ল্যাকহোল বা কৃষ্ণগহ্বর নিজের চোখে দেখি নাই: তাহলে ব্লাকহোল আছে সেটা বিশ্বাস করব কিভাবে????? ব্লাকহোল তো দেখা যায় না। কারণ সেটি আলোকেও শুষে নেয়। আর যে বস্তু থেকে আলো আমাদের চোখে আসে না সেটা আমরা দেখতে পাই না, তাহলে?
(২) একজন অন্ধ ব্যক্তি রং দেখতে পায়না। এমনকি অনুধাবনও করতে সক্ষম হয় না ।তাহলে কি- রং এর অস্তিত্ব নেই ?
(৩) আমি আপনি ইলেকট্রনকে অর্বিটালের ভেতর প্রোটনের চারিপাশে ঘুড়তে দেখেছি কখনও????
(৪) আমি এবং আপনি- মহাজগতের অনেকগুলো গ্রহের নাম জানি। কিন্তু নিজ চোখে দেখেছি? তাহলে না দেখেই বিশ্বাস করছি কেন?
(৫) আমরা বায়ুমণ্ডলের বিভিন্ন গ্যাসের অস্তিত্ব আছে বুজতে পারি, কিন্তু অক্সিজেন বা সেসব গ্যাসগুলোকে চোখে দেখতে পারি না। সেগুলো দেখতে কেমন সেটাও জানি না কিন্তু আমরা জানি আমাদের আশেপাশের বায়ুতে আছে। কেন এই অন্ধ বিশ্বাস???
তাই কোন কিছু চোখের সামনে দেখা যায় না বললেই তার অস্তিত্ব নেই এটা বলা কোন জ্ঞানীর লক্ষণ নয়। আমি ভ্যাটিকান সিটি যাই নি, সে দেশ কেমন দেখি নি। আমি দেখি নি বলে সেই দেশ নেই বা আমি এমন দেশ আছে বিশ্বাস করি না। এটা বলা গর্ধবের কাজ।
>>যাইহোক:-
(ক) আল্লাহর অস্তিত্বের জন্য আমাদেরকে প্রকৃতির দিকে তাকাতে হবে। এই প্রকৃতির সব কিছু সেটেল। মানে সবকিছু সুন্দরভাবে শৃঙ্খলাবদ্ধ। পশু পাখি, পিপড়া, মেঘ,পাহাড়,নদী সব কিছুই সেটেল। সবকিছুই যেন আগে থেকেই কেউ সুন্দর মত সেট হিসেবে গুছিয়ে রেখেছে।কে গুছালো? এগুলো কি এমনি এমনি নিজে থেকেই হয়ে গেছে??? আর এসব কিছু এমনি এমনি হয়ে যায়? মানুষের জীবনকেও তো গুছাতে হয়। এমনি এমনি হয় না সব কিছু । আর এগুলো এমনি এমনি হয়ে গেল???
(খ )আমাদের চোখের পাপড়ি আছে। এটি আমাদের চোখে যেন ধুলো না যায় সে জন্য। আমাদের চোখ সুনিপুণ ভাবে তৈরী করা। চোখে এমন সিস্টেমও আছে যেখানে ধুলাবালি বা অন্য কিছু পৌছে গেলে চোখ সাথে সাথে পিচ্ছিল আঠা নির্গত করে ডেমেজ কন্ট্রল করে । আমাদের শরীরের কণ্ঠ নালী,শ্বাস নালী বা খাদ্য নালী কি সুন্দর ভাবে গঠিত। শরীরে কোন ক্ষতি হলে নিজে থেকেই বিকল্প কাজ করা শুরু করে আমাদের মনের অজান্তেই। এখানে একজন কারিগরের কথা মনে পড়ে। যিনি মানুষ কে আশরাফুল মাকলুকাত দিয়েছেন। সৃষ্টির সেরা জীব। এ ধরনের কার অস্তিত্বের অনুভুতি আসবেই আপনার।
>>>আসলে মানুষ কে আল্লাহ্ জ্ঞান দান করেছেন শুধু তাদের নিজেদের প্রয়োজন মেটানোর জন্য । আবার অনেক সময় তাদের আরেকটু সুযোগ দেওয়া হয় আল্লাহর শক্তি মত্তা অনুধাবন করতে পারার জন্য । পিপড়ার তো অনেক জ্ঞান আছে তাই বলে কি তার জন্য পৃথিবীর এ বিশালতা বুঝতে পারা ও অনুধাবন করতে পারা সম্ভব ? তদ্রূপ মানুষের জন্য এ বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করতে পারাট অসম্ভব যদি না তাতে আল্লাহর ইচ্ছা থাকে।
>>>আচ্ছা মানুষ জন্ম নিল, কিছু দিন থাকলো আবার কিছু দিন পর মরে গেল। কেন? (আমি কিছু দিন বললাম কারণ: এই পৃথিবীর বয়সকাল চিন্তা করলে ৬০-৭০ বছর বাচা মানে কিছু দিনই।)
মানুষ কি হুদাই(অযথা) জন্ম নিল,হুদাই বাচল, হুদাই মরল? হুদাই একসময় জন্ম নিলাম আবার হুদাই মরে যাব?
আল্লাহ নাই: মানে এই পৃথিবীতে যাই করি মরে গেলে সব শেষ। কেউ দেখতে আসবে না। কোন বিচার টিচার কিচ্ছু হবে না। তার মানে পাপ বা অন্যায় বলে কিছু নাই । আমি যা চাইবো তাই ঠিক। আমি যে কাউকে হত্যা করোম। আসলে যাকে হত্যা করলাম তার ক্ষতি হল। আমার নয়। কারণ মরে যাওয়া মানে শেষ। কেবল শেষ আর কিছুই না।
###পৃথিবীতে নারী পুরুষের বিভাজন কি কেবল এমনি এমনি। নারী বাচ্চা জন্ম দেন। সেটার জন্য আবার আরেক জনের সাহায্য লাগে। অর্থাৎ এটি সিস্টেমে ব্যাপারটি আবদ্ধ। এইসব এমনি এমনি নিজে থেকেই হয়ে গেল??
উত্তর : কোনদিন ই নয়। হুদাহুদি কোন কিছু হয় না। বাহ্যিক বল ছাড়া। আমরা এমনি এমনি যেমন হুদাহুদি জন্মাবো না। তেমননি হুদাহুদি মরবো না। এই পৃথিবীর পরতে পরতে সৃষ্টকর্তার মহিমা দেখা যায়। তাই হুদাহুদি তত্ত্বে হুদাহুদি বিশ্বাস করার দরকারও নেই।
#অনেকে বলেন যে, আল্লাহ কে বানিয়েছে?
প্রশ্নটি অবান্তর। সৃষ্টিকর্তা মানে যিনি সবকিছু সৃষ্টি করেছেন। তাহলে যিনি সবকিছু করেছেন তার সৃষ্টা কিভাবে আসবে।
#যাইহোক শেষ একটি উদাহরণ দেই।
আল্লাহর অস্তিত্ব কোরআন দ্বারা অনুধাবন করা যায়। কুরানের বিভিন্ন আয়াত আপনার মনের মত নাও হতে পারে। কিন্তু কোরানের মাধ্যমে আল্লাহ তার নিদর্শন উল্লেখ করে অস্তিত্বের প্রমান দিয়েছে।
কিভাবে?
সূরাঃ আল-ফুরকান [25:53]
وَ ہُوَ الَّذِیۡ مَرَجَ الۡبَحۡرَیۡنِ ہٰذَا عَذۡبٌ فُرَاتٌ وَّ ہٰذَا مِلۡحٌ اُجَاجٌ ۚ وَ جَعَلَ بَیۡنَہُمَا بَرۡزَخًا وَّ حِجۡرًا مَّحۡجُوۡرًا ﴿۵۳﴾
তিনিই দুই সমুদ্রকে মিলিতভাবে প্রবাহিত করেছেন; একটি মিষ্টি, সুপেয় এবং অপরটি লবণাক্ত, খর; উভয়ের মধ্যে রেখে দিয়েছেন এক অন্তরায়, এক অনতিক্রম্য ব্যবধান।
And it is He Who has let free the two seas (kinds of water), one palatable and sweet, and the other salt and bitter, and He has set a barrier and a complete partition between them.
পাশাপাশি দুটি সমুদ্র কিন্তু একটির পানি অন্যটি অপেক্ষা স্বাদে ও গুণাগুণে সম্পূর্ণ আলাদ!!
রোম সাগর এবং আটলান্টিক মহাসাগরের সংযোগস্থলে দেখা যায় একটির পানি অপরটি অপেক্ষা সম্পূর্ণ ভিন্ন।
আবার জিব্রাল্টার প্রণালী যেখানে ভূমধ্যসাগর এবং আটলান্টিক মহাসাগর মিলিত হয় সেখানেও একই চিত্র! অর্থাৎ দুপাশের পানি সম্পূর্ণ আলাদা!
এটি বৈজ্ঞানিকভাবে কিভাবে হল সেটা আপনি বের করতে পারবেন কিন্তু এটির সৃষ্টা আল্লাহ। বিজ্ঞান স্রষ্টার সৃষ্টির মেকানিজম ব্যাখা করে কিন্তু সৃষ্টির মালিক তো তিনিই ।
লেখক: ASLAM MAHMUD