1. mahfujpanjeree@gmail.com : Mahfuzur-Rahman :
  2. admin@samagrabangla.com : main-admin :
  3. mahmudursir@gmail.com : samagra :

ভাল মৃত্যু এবং খারাপ মৃত্যুর আলামত

  • Update Time : মঙ্গলবার, জানুয়ারি ২৬, ২০২১

পৃথিবীতে যতটি প্রাণ আছে প্রতিটি প্রাণকেই মৃত্যুবরণ করতে হবে ।

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম। আল্লাহ্ সুবহানওয়া তা’আলা বলেন:
❖”প্রত্যেক প্রাণীকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে। আর কিয়ামতের দিন তোমাদের পরিপূর্ণ বদলা দেওয়া হবে। তারপর যাকে দোযখ থেকে দূরে রাখা হবে এবং জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে, সেই সফলকাম। আর পার্থিব জীবন ধোঁকার বস্তু ছাড়া কিছুই নয়।” -(সূরা আল ইমরান, আয়াত: ১৮৫)

❖”প্রত্যেককে মৃত্যুর স্বাদ আস্বাদন করতে হবে। আমি তোমাদেরকে মন্দ ও ভাল দ্বারা পরীক্ষা করে থাকি এবং আমারই কাছে তোমরা প্রত্যাবর্তিত হবে।” -(সূরা আম্বিয়া, আয়াত: ৩৫)

❖”তোমরা যেখানেই থাক না কেন; মৃত্যু কিন্তু তোমাদেরকে পাকড়াও করবেই। যদি তোমরা সুদৃঢ় দূর্গের ভেতরেও অবস্থান কর, তবুও।…” -(সূরা আন নিসা, আয়াত: ৭৮)

❖”হে ঈমাণদারগণ! তোমরা তাদের মত হয়ো না, যারা কাফের হয়েছে এবং নিজেদের ভাই বন্ধুরা যখন কোন অভিযানে বের হয় কিংবা জিহাদে যায়, তখন তাদের সম্পর্কে বলে, তারা যদি আমাদের সাথে থাকতো, তাহলে মরতোও না আহতও হতো না। যাতে তারা এ ধারণা সৃষ্টির মাধ্যমে সংশ্লিষ্টদের মনে অনুতাপ সৃষ্টি করতে পারে। অথচ আল্লাহই জীবন দান করেন এবং মৃত্যু দেন। তোমাদের সমস্ত কাজই, তোমরা যা কিছুই কর না কেন, আল্লাহ সবকিছুৃই দেখেন।” -(সূরা আল ইমরান, আয়াত: ১৫৬)

❖”তুমি কি তাদেরকে দেখনি, যারা মৃত্যুর ভয়ে নিজেদের ঘর ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছিলেন? অথচ তারা ছিল হাজার হাজার। তারপর আল্লাহ তাদেরকে বললেন মরে যাও। তারপর তাদেরকে জীবিত করে দিলেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ মানুষের উপর অনুগ্রহকারী। কিন্তু অধিকাংশ লোক শুকরিয়া প্রকাশ করে না।” -(সূরা বাকারাহ্, আয়াত: ২৪৩)

❖”বলুন, তোমরা যে মৃত্যু থেকে পলায়নপর, সেই মৃত্যু অবশ্যই তোমাদের মুখামুখি হবে, অতঃপর তোমরা অদৃশ্য, দৃশ্যের জ্ঞানী আল্লাহর কাছে উপস্থিত হবে। তিনি তোমাদেরকে জানিয়ে দিবেন সেসব কর্ম, যা তোমরা করতে।” -(সূরা আল জুমুআহ, আয়াত: ৮)

❖”যখন তাদের কারও কাছে মৃত্যু আসে, তখন সে বলেঃ হে আমার পালণকর্তা! আমাকে পুনরায় (দুনিয়াতে ) প্রেরণ করুন।যাতে আমি সৎকর্ম করতে পারি, যা আমি করিনি। কখনই নয়, এ তো তার একটি কথার কথা মাত্র। তাদের সামনে পর্দা আছে পুনরুত্থান দিবস পর্যন্ত।” -(সূরা আল মুমিনুন, আয়াত: ৯৯-১০০)

❖”যেদিন তারা ফেরেশতাদেরকে দেখবে, সেদিন অপরাধীদের জন্যে কোন সুসংবাদ থাকবে না এবং তারা বলবে, কোন বাধা যদি তা আটকে রাখত।” -(সূরা আল ফুরকান, আয়াত: ২২)

❖”ফেরেশতা যখন তাদের মুখমন্ডল ও পৃষ্ঠদেশে আঘাত করতে করতে প্রাণ হরণ করবে, তখন তাদের অবস্থা কেমন হবে?” -(সূরা মুহাম্মদ, আয়াত: ২৭)

❖”আর যদি তুমি দেখ, যখন ফেরেশতারা কাফেরদের জান কবজ করে; প্রহার করে, তাদের মুখে এবং তাদের পশ্চাদদেশে আর বলে, জ্বলন্ত আযাবের স্বাদ গ্রহণ কর।” -(সূরা আল আনফাল, আয়াত: ৫০)

❖”ফেরেশতারা তাদের জান এমতাঅবস্থায় কবজ করে যে, তারা নিজেদের উপর যুলুম করেছে। তখন তারা অনুগত্য প্রকাশ করবে যে, আমরা তো কোন মন্দ কাজ করতাম না। হ্যাঁ নিশ্চয় আল্লাহ সববিষয় অবগত আছেন, যা তোমরা করতে। অতএব, জাহান্নামের দরজসমূহে প্রবেশ কর, এতেই অনন্তকাল বাস কর। আর অহংকারীদের
আবাসস্থল কতই নিকৃষ্ট।” -(সূরা নাহল, আয়াত: ২৮-২৯)

❖”নিশ্চয় যারা বলে, আমাদের পালনকর্তা আল্লাহ, অতঃপর তাতেই অবিচল থাকে, তাদের কাছে ফেরেশতা অবতীর্ণ হয় এবং বলে, তোমরা ভয় করো না, চিন্তা করো না এবং তোমাদের প্রতিশ্রুত জান্নাতের সুসংবাদ শোন।” -(সূরা হা-মীম সিজদাহ্, আয়াত: ৩০)

❖”ফেরেশতা যাদের জান কবজ করেন তাদের পবিত্র থাকা অবস্থায়, এই বলে যে, তোমাদের প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক। তোমরা যা করতে, তার প্রতিদানে জান্নাতে প্রবেশ কর ।” -(সূরা নাহল, আয়াত: ৩২)

❖”হে প্রশান্ত মন, তুমি তোমার পালনকর্তার নিকট ফিরে যাও সন্তুষ্ট ও সন্তোষভাজন হয়ে।” -(সূরা আল ফজর, আয়াত: ২৭-২৮)

❖”প্রত্যেক ব্যক্তির নির্ধারিত সময় যখন উপস্থিত হবে, তখন আল্লাহ কাউকে অবকাশ দেবেন না। তোমরা যা কর, আল্লাহ সে বিষয়ে খবর রাখেন।” -(সূরা মুনাফিকুন, আয়াত: ১১)

❖আমি তোমাদের মাঝে মৃত্যুকে নির্ধারণ করেছি।
সূরা ওয়াক্বিয়া-৬০
قُلْ إِنَّ الْمَوْتَ الَّذِي تَفِرُّونَ مِنْهُ فَإِنَّهُ مُلَاقِيكُمْ ثُمَّ تُرَدُّونَ إِلَى عَالِمِ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ فَيُنَبِّئُكُم بِمَا كُنتُمْ تَعْمَلُونَ
❖বলুন, তোমরা যে মৃত্যু থেকে পলায়ন কর, সেই মৃত্যু অবশ্যই তোমাদের মুখামুখি হবে, অতঃপর তোমরা অদৃশ্য, দৃশ্যের জ্ঞানী আল্লাহর কাছে উপস্থিত হবে। তিনি তোমাদেরকে জানিয়ে দিবেন সেসব কর্ম, যা তোমরা করতে।
আল্ জুমআ ৮
هُوَ الَّذِي خَلَقَكُم مِّن تُرَابٍ ثُمَّ مِن نُّطْفَةٍ ثُمَّ مِنْ عَلَقَةٍ ثُمَّ يُخْرِجُكُمْ طِفْلًا ثُمَّ لِتَبْلُغُوا أَشُدَّكُمْ ثُمَّ لِتَكُونُوا شُيُوخًا وَمِنكُم مَّن يُتَوَفَّى مِن قَبْلُ وَلِتَبْلُغُوا أَجَلًا مُّسَمًّى وَلَعَلَّكُمْ تَعْقِلُونَ
❖তিনি তো তোমাদের সৃষ্টি করেছেন মাটির দ্বারা, অতঃপর শুক্রবিন্দু দ্বারা, অতঃপর জমাট রক্ত দ্বারা, অতঃপর তোমাদেরকে বের করেন শিশুরূপে, অতঃপর তোমরা যৌবনে পদর্পণ কর, অতঃপর বার্ধক্যে উপনীত হও। তোমাদের কারও কারও এর পূর্বেই মৃত্যু ঘটে এবং তোমরা নির্ধারিত কালে পৌঁছ এবং তোমরা যাতে অনুধাবন কর।
সূরা গাফির:৬৭
قُل لَّن يَنفَعَكُمُ الْفِرَارُ إِن فَرَرْتُم مِّنَ الْمَوْتِ أَوِ الْقَتْلِ وَإِذًا لَّا تُمَتَّعُونَ إِلَّا قَلِيلًا
❖ বলুন! তোমরা যদি মৃত্যু অথবা হত্যা থেকে পলায়ন কর, তবে এ পলায়ন তোমাদের কাজে আসবে না। তখন তোমাদেরকে সামান্যই ভোগ করতে দেয়া হবে।
সূরা আল্ আহযাব :১৬
اللَّهُ الَّذِي خَلَقَكُمْ ثُمَّ رَزَقَكُمْ ثُمَّ يُمِيتُكُمْ ثُمَّ يُحْيِيكُمْ هَلْ مِن شُرَكَائِكُم مَّن يَفْعَلُ مِن ذَلِكُم مِّن شَيْءٍ سُبْحَانَهُ وَتَعَالَى عَمَّا يُشْرِكُونَ
❖আল্লাহই তোমাদের সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর রিযিক দিয়েছেন, এরপর তোমাদের মৃত্যু দেবেন, এরপর তোমাদের জীবিত করবেন। তোমাদের শরীকদের মধ্যে এমন কেউ আছে কি, যে এসব কাজের মধ্যে কোন একটিও করতে পারবে? তারা যাকে শরীক করে, আল্লাহ তা থেকে পবিত্র ও মহান।
সূরা আর্ রূম:৪০
أَيْنَمَا تَكُونُواْ يُدْرِككُّمُ الْمَوْتُ وَلَوْ كُنتُمْ فِي بُرُوجٍ مُّشَيَّدَةٍ وَإِن تُصِبْهُمْ
❖তোমরা যেখানেই থাক না কেন; মৃত্যু কিন্তু তোমাদেরকে পাকড়াও করবেই। যদি তোমরা সুদৃঢ় দূর্গের ভেতরেও অবস্থান কর, তবুও।
সূরা আন নিসা:৭৮
كُلُّ نَفْسٍ ذَآئِقَةُ الْمَوْتِ وَإِنَّمَا تُوَفَّوْنَ أُجُورَكُمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فَمَن زُحْزِحَ عَنِ النَّارِ وَأُدْخِلَ الْجَنَّةَ فَقَدْ فَازَ وَما الْحَيَاةُ الدُّنْيَا إِلاَّ مَتَاعُ الْغُرُورِ
❖প্রত্যেক প্রাণীকে আস্বাদন করতে হবে মৃত্যু। আর তোমরা কিয়ামতের দিন পরিপূর্ণ বদলা প্রাপ্ত হবে। তারপর যাকে দোযখ থেকে দূরে রাখা হবে এবং জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে, তার কার্যসিদ্ধি ঘটবে। আর পার্থিব জীবন ধোঁকা ছাড়া অন্য কোন সম্পদ নয়।
সূরা আল্ ইমরান: ১৮৫
كُلُّ نَفْسٍ ذَائِقَةُ الْمَوْتِ وَنَبْلُوكُم بِالشَّرِّ وَالْخَيْرِ فِتْنَةً وَإِلَيْنَا تُرْجَعُونَ
❖প্রত্যেককে মৃত্যুর স্বাদ আস্বাদন করতে হবে। আমি তোমাদেরকে মন্দ ও ভাল দ্বারা পরীক্ষা করে থাকি এবং আমারই কাছে তোমরা প্রত্যাবর্তিত হবে।
সুরা আম্বিয়া :৩৫
كُلُّ نَفْسٍ ذَائِقَةُ الْمَوْتِ ثُمَّ إِلَيْنَا تُرْجَعُونَ
❖জীবমাত্রই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে। অতঃপর তোমরা আমারই কাছে প্রত্যাবর্তিত হবে।
সুরা আনকাবুত :৫৭
إِنَّكَ مَيِّتٌ وَإِنَّهُم مَّيِّتُونَ
❖নিশ্চয় তোমারও মৃত্যু হবে এবং তাদেরও মৃত্যু হবে।
সুরা যুমার:৩০
فَإِذَا جَاء أَجَلُهُمْ لاَ يَسْتَأْخِرُونَ سَاعَةً وَلاَ يَسْتَقْدِمُونَ
❖অতঃপর নির্ধারিত সময়ে যখন তাদের মৃত্যু এসে যাবে, তখন এক মুহুর্তও বিলম্বিত কিংবা তরান্বিত করতে পারবে না।
সূরা নাহল-৬১
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تُلْهِكُمْ أَمْوَالُكُمْ وَلَا أَوْلَادُكُمْ عَن ذِكْرِ اللَّهِ وَمَن يَفْعَلْ ذَلِكَ فَأُوْلَئِكَ هُمُ الْخَاسِرُونَ
وَأَنفِقُوا مِن مَّا رَزَقْنَاكُم مِّن قَبْلِ أَن يَأْتِيَ أَحَدَكُمُ الْمَوْتُ فَيَقُولَ رَبِّ لَوْلَا أَخَّرْتَنِي إِلَى أَجَلٍ قَرِيبٍ فَأَصَّدَّقَ وَأَكُن مِّنَ الصَّالِحِينَ
وَلَن يُؤَخِّرَ اللَّهُ نَفْسًا إِذَا جَاء أَجَلُهَا وَاللَّهُ خَبِيرٌ بِمَا تَعْمَلُونَ
❖হে মুমিনগণ! তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি যেন তোমাদেরকে আল্লাহর স্মরণ থেকে গাফেল না করে। যারা এ কারণে গাফেল হয়, তারাই তো ক্ষতিগ্রস্ত।আমি তোমাদেরকে যা দিয়েছি, তা থেকে মৃত্যু আসার আগেই ব্যয় কর। অন্যথায় সে বলবেঃ হে আমার পালনকর্তা, আমাকে আরও কিছুকাল অবকাশ দিলে না কেন? তাহলে আমি সদকা করতাম এবং সৎকর্মশীলদের অন্তর্ভুক্ত হতাম।প্রত্যেক ব্যক্তির নির্ধারিত সময় যখন উপস্থিত হবে, তখন আল্লাহ কাউকে অবকাশ দেবেন না। তোমরা যা কর, আল্লাহ সে বিষয়ে খবর রাখেন।
সূরা মুনাফিকুন:৯-১১
حَتَّى إِذَا جَاء أَحَدَهُمُ الْمَوْتُ قَالَ رَبِّ ارْجِعُونِ
لَعَلِّي أَعْمَلُ صَالِحًا فِيمَا تَرَكْتُ كَلَّا إِنَّهَا كَلِمَةٌ هُوَ قَائِلُهَا وَمِن وَرَائِهِم بَرْزَخٌ إِلَى يَوْمِ يُبْعَثُونَ
فَإِذَا نُفِخَ فِي الصُّورِ فَلَا أَنسَابَ بَيْنَهُمْ يَوْمَئِذٍ وَلَا يَتَسَاءلُونَ
فَمَن ثَقُلَتْ مَوَازِينُهُ فَأُوْلَئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُونَ
وَمَنْ خَفَّتْ مَوَازِينُهُ فَأُوْلَئِكَ الَّذِينَ خَسِرُوا أَنفُسَهُمْ فِي جَهَنَّمَ خَالِدُونَ
تَلْفَحُ وُجُوهَهُمُ النَّارُ وَهُمْ فِيهَا كَالِحُونَ

❖যখন তাদের কারও কাছে মৃত্যু আসে, তখন সে বলে,”হে আমার পালনকর্তা! আমাকে পুনরায় (দুনিয়াতে ) প্রেরণ করুন। যাতে আমি সৎকর্ম করতে পারি, যা আমি করিনি।
কখনই নয়, এ তো তার একটি কথার কথা মাত্র। তাদের সামনে পর্দা আছে পুনরুত্থান দিবস পর্যন্ত।অতঃপর যখন শিংগায় ফুৎকার দেয়া হবে, সেদিন তাদের পারস্পরিক আত্নীয়তার বন্ধন থাকবে না এবং একে অপরকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে না।যাদের পাল্লা ভারী হবে, তারাই হবে সফলকাম, এবং যাদের পাল্লা হাল্কা হবে তারাই নিজেদের ক্ষতিসাধন করেছে, তারা দোযখেই চিরকাল বসবাস করবে।আগুন তাদের মুখমন্ডল দগ্ধ করবে এবং তারা তাতে বীভৎস আকার ধারন করবে।
সূরা মুমিনুন:৯৯-১০৪
أَلَمْ يَأْنِ لِلَّذِينَ آمَنُوا أَن تَخْشَعَ قُلُوبُهُمْ لِذِكْرِ اللَّهِ وَمَا نَزَلَ مِنَ الْحَقِّ وَلَا يَكُونُوا كَالَّذِينَ أُوتُوا الْكِتَابَ مِن قَبْلُ فَطَالَ عَلَيْهِمُ الْأَمَدُ فَقَسَتْ قُلُوبُهُمْ وَكَثِيرٌ مِّنْهُمْ فَاسِقُونَ
❖ মুমিনদের জন্য কি এখনো সে সময় আসে নি যে তাদের হৃদয় আল্লাহর স্মরণে বিগলিত হবে? তারা তাদের মত যেন না হয়, যাদেরকে পূর্বে কিতাব দেয়া হয়েছিল। তাদের উপর সুদীর্ঘকাল অতিক্রান্ত হয়েছে, অতঃপর তাদের অন্তঃকরণ কঠিন হয়ে গেছে। তাদের অধিকাংশই পাপাচারী।
সূরা হাদীদ-১৬
وَمَا تَدْرِي نَفْسٌ بِأَيِّ أَرْضٍ تَمُوتُ
❖ এবং কেউ জানে না কোন দেশে সে মৃত্যুবরণ করবে।
সূরা লোকমান -৩৪
আল-হাদীস:
❖ ইবনে উমার (রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু) থেকে বর্ণিত।
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমার কাঁধ ধরে বললেন:
“দুনিয়াতে এভাবে কাটাও যেন তুমি একজন মুসাফির বা পথিক।”
ইবনে উমার (রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু) বলতেন,
“তুমি সন্ধ্যায় উপনীত হয়ে সকাল বেলার অপেক্ষা (আশা) করো না এবং সকালে উপনীত হয়ে সন্ধ্যা বেলার অপেক্ষা করো না। সুস্বাস্থ্যের দিনগুলোতে রোগব্যাধির (দিনগুলোর) জন্য প্রস্তুতি নাও এবং জীবদ্দশায় মৃত্যুর জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করো।”
(বুখারী)
রিয়াদুস সলিহীন:৫৭৫
❖ ইবনে মাসঊদ (রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু) থেকে বর্ণিত।
তিনি বলেন,
নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) একটি বর্গক্ষেত্র আঁকলেন, তার মাঝ বরাবর কয়েকটি সরল রেখা টানলেন যা বর্গক্ষেত্র ভেদ করে বাইরে চলে গেছে। তিনি মধ্যবর্তী এ রেখাটির সাথে যুক্ত আরো কতগুলো ছোট ছোট সরল রেখা (আড়াআড়ি ভাবে) টানলেন, তারপর বলেন:
“এটা হল মানুষ এবং এটা তার মৃত্যু যা তাকে বেষ্টন করে আছে। (বর্গক্ষেত্র ভেদ করে) বাইরে বেরিয়ে যাওয়া রেখাটুকু হচ্ছে তার আশা-আকাঙ্ক্ষা। ছোট ছোট রেখাগুলো হল তার জীবনের বিপদাপদ। একটি বিপদ থেকে ছুটতে পারলে অপর বিপদ এসে তাকে বিচলিত করে।। আবার দ্বিতীয়টি থেকে রেহাই পেলে তৃতীয়টি তাকে নিষ্পেষিত করে।”
(বুখারী)
রিয়াদুস সলিহীন:৫৭৮
❖ আবু হুরাইরা (রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন:
“সাতটি জিনিস প্রকাশ পাওয়ার পূর্বেই তোমরা নেক কাজের দিকে সত্ত্বর অগ্রসর হও।
(১) তোমরা কি অপেক্ষা করছো এমন দরিদ্র্যের যা অমনোযোগী (অক্ষম) করে দেয়,
(২) অথবা এমন প্রাচুর্যের যা ধর্মদ্রোহী বানায়,
(৩) অথবা এরূপ রোগ-ব্যাধির যা (দৈহিক সামর্থ্যকে) তছনছ করে দেয়,
(৪) অথবা এমন বৃদ্ধাবস্থার যা জ্ঞান-বুদ্ধিকে লোপ করে দেয়,
(৫) অথবা এমন মৃত্যুর যা অলক্ষ্যেই উপস্থিত হয়,
(৬) কিংবা দাজ্জালের, যা অপেক্ষামাণ নিকৃষ্ট অনুপস্থিত বস্তু,
(৭) অথবা কিয়ামাতের যা অত্যন্ত বিভীষিকাময় ও তিক্ত।”
ইমাম তিরমিযী হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, এটি হাসান হাদীস।
রিয়াদুস সলিহীন:৫৭৯
❖ আবু হুরাইরা (রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন:
“তোমরা (দুনিয়ার) স্বাদ-আহলাদ নিঃশেষকারী মৃত্যুকে বেশি বেশি স্মরণ করো।”
ইমাম তিরমিযী এ হাদীস বর্ণনা করেছেন এবং বলেছেন, এটি হাসান হাদীস।
মৃত্যু যন্ত্রনা সম্পর্কে নবী করিম (সাঃ) এরশাদ করেনঃ
হযরত হাসান বসরী বর্ননা করেন নবী করীম সাঃ বলেন, মুমিনের মৃত্যু যন্ত্রনা ও কষ্ট ৩০০ বার তলোয়ারের আঘাতের সমান। মৃত্যু সম্পর্কে যার এ বিশ্বাস রয়েছে তার উচিত নেক কাজ করে ও পাপ কাজ পরিত্যগ করে মৃত্যুর জন্য প্রস্তুতি নেয়া। কারন মানুষ জানে না যে মৃত্যু কখন আসবে।
একদিন হযরত উমর রাঃ কা’ব রাঃ কে বললেন- হে কা’ব মৃত্যু সম্পর্কে বলুন। তিনি বললনে যে মৃত্যু হল একটি কাঁটাযুক্ত গাছের ন্যায়। সে গাছটি আদম সন্তানের পেটে প্রবেশ করিয়ে দিলে তার প্রতিটি কাঁটা শিরা উপশিরায় গেঁথে গেল। অতঃপর কোন শক্তিশালী ব্যাক্তি সেটা ধরে টান দিলে তার কিছু অংশ ছিঁড়ে চলে এল আর কিছু অংশ রয়ে গেল।

উপরের আয়াতসমূহে আল্লাহ্ সুবহানওয়া তা’আলা আমাদেরকে মৃত্যুর কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন এবং কাফিরদের মৃত্যুযন্ত্রণা ও মুমিনদের সুসংবাদও প্রকাশ করে দিচ্ছেন । আল্লাহ্ আমাদের আত্মাকে পবিত্র করুন এবং আপনার সন্তোষভাজন হওয়ার যোগ্যতা দান করুন । আমীন ।

[বি:দ্র: এই বিষয়ে পবিত্র কুরআন মাজীদে আরও আয়াত রয়েছে এবং রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণিত বিস্তারিত হাদীসও রয়েছে।]

আমরা পৃথিবীতে যারাই এসেছি আবার এই পৃথিবী থেকে বিদায় নিতে হবে৷ আমাদের সবাইকে মৃত্যুবরণ করতে হবে এটিই হল চিরসত্য বা মহাসত্য।
কিন্তু আমরা কোথায় মৃত্যুবরণ করব?
কিভাবে আমাদের মৃত্যু ঘটবে,
এ ব্যাপারে আমরা কিছুই জানিনা।
আল্লাহ তায়ালা সূরা লোকমানের ৩৪ নাম্বার আয়াতে বলেন, কোনো মানুষই জানেনা সে কোন জায়গায় কোথায় মৃত্যুবরণ করবে। আমাদের মৃত্যুর ব্যাপারে কেবলমাত্র আল্লাহ তায়ালা ই জানেন তিনি মহাজ্ঞানী তিনি সবকিছু জানেন।

ভাল মৃত্যু এবং খারাপ মৃত্যুর ব্যাপারে কুরআন সুন্নাহের কয়েকটি আলামত হল :

(১) কেউ যদি আত্মহত্যা করে মৃত্যুবরণ করে তাহলে এটি খারাপ মৃত্যু কারন রাসূল (সাঃ) এরশাদ করেছেন কেউ যদি যে জিনিস দিয়ে সে নিজের প্রাণহত্যা করবে কিয়ামতের দিন তাকে সেই শাস্তি ই দেওয়া হবে।যেমন: কেউ যদি গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মাহত্যা করে জাহান্নামে সে গলায় ফাঁস লাগাতেই থাকবে।
কেউ যদি বিষ খেয়ে আত্মাহত্যা করে তাহলে জাহান্নামে সে বিষ খেতেই থাকবে।

(২) কেউ যদি কবিরা গোনাহ করা অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে তাহলে তার মৃত্যু টা ও হল খারাপ মৃত্যু। যেমন: মদ খাওয়া অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছে কিংবা কারো প্রতি ব্যাভিচার জুলুম করা অবস্থায় করেছে তাহলে তার মৃত্যু টা হবে খারাপ মৃত্যু।

(৩) বাবা মা যদি কোনো কারনে সন্তানের উপর রেখে থাকেন এবং এই অবস্থায় যদি এই সন্তান মারা যায় তখন তার মৃত্যু টা খারাপ মৃত্যু বলে ধারনা করা যেতে পারে৷
(৪) স্বামী যদি তার স্ত্রীর প্রতি রেখে থাকেন স্ত্রীর অন্যায়ের কারনে সেই অবস্থায় যদি স্ত্রীর মৃত্যু ঘটে তাহলে সে মৃত্যু মন্দ মৃত্যু বা খারাও বিদায় হিসেবে ধারণা করা যায়।
(৫) কোনো ব্যক্তির মৃত্যুতে যদি গোটা মুসলিম কমিউনিটি আনন্দ প্রকাশ করে উল্লাস করে এটাও ঐ ব্যক্তির খারাপ মৃত্যু বলে ধারনা করা যায়।

ভাল মৃত্যুর কয়েকটি আলামত নিচে দেওয়া হল :

(১) মৃত্যুর সময় যদি কেউ আল্লাহর জিকির অবস্থায় আল্লাহ কে স্মরন করা অবস্থায় কিংবা কালিমা পাঠ করা অবস্থায় কুরআন তেলাওয়াত করা অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে তাহলে আশা করা যায় তার মৃত্যুটা খুব ভাল মৃত্যু হয়েছে৷ কেননা রাসূল (সাঃ) বলেন যার শেষ বাক্য টা হবে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু কালিমা পাঠ করে যদি মৃত্যুবরণ করে তাহলে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে বলে রাসূল (সাঃ) সুসংবাদ দিয়েছেন।

(২) কেউ যদি জিহাদের মাঠে মৃত্যুবরণ করে তাহলে নিসন্দেহে সেটা শ্রেষ্ঠ মৃত্যু। আল্লাহ তায়ালার কাছে শ্রেষ্ঠ মৃত্যু হল শাহাদাতের মৃত্যু।

(৩) রমজান মাসে যদি কোনো ইমানদার মারা যায় তাহলে সেটা ভাল মৃত্যু বলে ধারনা করা যায়।

(৪) হজের সফরে যদি কেউ মৃত্যুবরণ করে তাহলে সেটা ভাল মৃত্যু বলে ধারনা করা যায়।

(৫) জুমার রাতে যদি কেউ ইন্তেকাল করে লোকটা ইমানদার হয় তাহলে সেটা ভাল মৃত্যু বলে ধারনা করা যায়।

(৬) ভাল কাজ করা অবস্থায় যদি কেউ মারা যায়। যেমন কুরআন তেলাওয়াত করা অবস্থায় মৃত্যুবরণ করলে সেটা ভাল মৃত্যু বলে ধারনা করা যায়।

(৭) সেজদা রত অবস্থায় রোজা মুখে অবস্থায় কেই মৃত্যুবরণ করলে সেটা ভাল মৃত্যু বলে ধারনা করা যায় ।

হে আল্লাহ, মৃত্যুর সময় তুমি আমাদেরকে দয়া করে ঈমান এবং ভালো আমলের সাথে মৃত্যু দান করিও।
আমিন। ইয়া রব্বাল আলামিন।

 

তথ্যটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে শেয়ার করুন

More News Of This Category