March 29, 2023, 3:48 pm
বান্ধবীর বিয়েতে এসে গণধর্ষণের শিকার:
ঢাকায় গার্মেন্টে কাজ করা বাগেরহাটের এক গার্মেন্ট কর্মী হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলায় বান্ধবীর বিয়েতে এসে গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন। পরে ধর্ষণকারীরা ঘটনা ধামাচাপা দিতে ‘আত্মহত্যার চেষ্টা’র নাটক সাজাতে ভিকটিমকে ঘরের সিলিংএ ঝুলিয়ে রাখে। এ ঘটনার ভিকটিম থানায় অভিযোগ দিলে জড়িত তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। এর মাঝে দুই নারী আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে এই ঘটনার বিষয় স্বীকার করেছে।
পুলিশ জানায়- ঢাকায় গার্মেন্টেসে কাজ করা বাগেরহাটের শ্মরণখোলা উপজেলার কোন্তাকাটা গ্রামের ১৯ বছর বয়সী এক নারী গার্মেন্টস কর্মী ও হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার নোয়াগাঁও গ্রামের দেলোয়ার হোসেন দিলুর মেয়ে কোহিনুর আক্তারের সাথে গার্মেন্টসে চাকুরী করার সুবাদে তাদের মাঝে ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব সর্ম্পক গড়ে ওঠে। পরে, গত ৬ মার্চ বান্ধবী কোহিনুরের বিয়েতে বিয়েতে অংশ নেয়ার জন্য ঢাকা থেকে লাখাইয়ে আসেন। এদিকে- এ কয়েকদিনে কোহিনোরের নিকটাত্মীয় একই গ্রামের মনা মিয়ার ছেলে শিপন মিয়ার সাথে বাগের হাট থেকে আসা মেয়েটির প্রেমের সর্ম্পক হয়। ১২ মার্চ কোহিনুরের বিয়ের অনুষ্ঠান ছিল। বিয়ের অনুষ্ঠানে মোবাইল ফোনে ধারণ করা ছবি নিয়ে বান্ধবীর পরিবারের সাথে ঝগড়াও হয়েছিল মেয়েটির।
পুরিশ আরও জানায়- বিয়ের দিন রাতে ওই মেয়ে আফিয়া খাতুনের ঘরে ছিলেন। তখন শিপন সহ চারজন যুবক ঘরটির দরজা বন্ধ করে তাকে ধর্ষণ করে। কিছুক্ষণ পর কোহিনুরের পরিবারের লোকজন ঘরের দরজার সামনে আসলে তাদের সামনেই চার যুবক বেরিয়ে যান। পরে ধর্ষণকারীরা ঘটনা আড়ালের উদ্দেশ্যে ‘আত্মহত্যার চেষ্টা’র নাটক সাজাতে ভিকটিমকে ঘরের সিলিংয়ে ঝুলিয়ে রাখে এবং তিনি আত্মহত্যার চেষ্টা করতে চেয়ে ছিলেন বলে প্রচার করতে থাকেন। তবে ভিকটিমের মৃত্যু না হওয়ায় প্রকৃত রহস্য উদঘাটন সম্ভব হয়েছে।
ঐ দিনের (১২ মার্চ) পর থেকে ১৫ মার্চ পযর্ন্ত ভিকটিমকে হবিগঞ্জ ও সিলেটের বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসা করিয়েছেন অভিযুক্তরা। তখন ভিকটিমের পরিবারের সাথে তাকে যোগাযোগ করতে দেয়নি তারা।
এক পযার্য়ে ১৫ মার্চ মেয়েটির বড় বোন বাগেরহাট থেকে লাখাইয়ে আসলে তার হাতে হস্তান্তর করা হয় এবং ভিকটিম ধর্ষনের শিকার হয় হয়েছে বলে বোনকে জানান। এরপর আরও দুইদিন চিকিৎসা নিয়ে ১৮ মার্চ ধর্ষণের শিকার মেয়ে বাদী হয়ে লাখাই থানায় মামলা দায়ের করেন।
লাখাই থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোঃ মহিউদ্দিন জানান-মামলায় আসামী সাতজন। এর মাঝে আশরাফ উদ্দিন এর স্ত্রী আফিয়া বেগম, মকবুল হোসেন এর ছেলে দেলোয়ার হোসেন দিলু ও দেলোয়ার হোসেন দিলুর স্ত্রী রাবেয়া খাতুনকে গ্রেফতার করে।
এদিকে গত শুক্রবার ১৯ মার্চ দুপুরে আফিয়া বেগম ও রাবেয়া খাতুনকে হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিনা বেগম এর আদালতে নিয়ে আসলে তারা ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার কথা স্বীকার করে। একই আদালত শুক্রবার বিকেলে ভিকটিমের ২২ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড করে।
মূল আসামিরা এখনও গ্রেফতার হয়নি।তবে তাদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রেখেছে।