1. mahfujpanjeree@gmail.com : Mahfuzur-Rahman :
  2. admin@samagrabangla.com : main-admin :
  3. mahmudursir@gmail.com : samagra :

প্রিন্ট পত্রিকা বনাম অনলাইন নিউজ পোর্টাল : প্রেক্ষাপট বাংলাদেশ

  • Update Time : বুধবার, নভেম্বর ১৮, ২০২০
অ্যাডভোকেট মো. রাসেদ উদ্দিন: লেখার শুরুতেই বলে নিচ্ছি পাঠক চাহিদা ও সময়ের প্রয়োজনে আমি অনলাইন ভিত্তিক সংবাদমাধ্যমের বিপক্ষে নই। অনলাইন ভিত্তিক সংবাদমাধ্যমে কাজ করে যারা জীবিকা নির্বাহ করছেন তাদের মনে কষ্ট দেয়া কিংবা হেয় প্রতিপন্ন করা আমার এই লেখার উদ্দেশ্য নয়। এতদ্বসত্ত্বেও আমার এই লেখা পড়ে যদি কেউ কোনভাবে কষ্ট পেয়ে থাকেন আমি তাদের নিকট ক্ষমাপ্রার্থী। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে এখন আর এড়িয়ে চলার সুযোগ নাই। আমিও তার ব্যতিক্রম নই। মাঝে মধ্যে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়া এখন একরকম অভ্যাসে পরিনত হয়ে গেছে। তম্মধ্যে কিছু স্ট্যাটাস জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট, কিছু ব্যবসায়ীক উদ্দেশ্যে আবার কিছু একান্ত ব্যক্তিগত যা শুধু মনের খোরাক বই অন্য কিছু নয়। যেহেতু সরকারি মিডিয়া তালিকাভুক্ত একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকা সম্পাদনা করছি তাই কিছু স্ট্যাটাস কিংবা পোষ্ট পেশাগত ও সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকেই দিয়ে থাকি। অনেক স্ট্যাটাসের পরে পাবলিক কমেন্টে নিউজ পোর্টালের সাথে সংশ্লিষ্ট কিছু সংবাদকর্মী ও মালিক দাবীদার পরিচয়ে এমন অকথ্য ভাষায় কমেন্ট করেন যা বলতে এমনকি উচ্চারণ করতেও রুচিতে বাঁধে। যৌক্তিকভাবে আমার লেখার সমালোচনা করলে তা দোষের কিছু নয়। কিন্তু অযৌক্তিক, অহেতুক ও অন্যায় অপবাদ কি মুখ বুঝে সহ্য করা যায় ? ধৈর্য্যরে বাঁধ ভাঙ্গা সে প্রতিবাদী আবেগ থেকেই আজকের লেখনীর সূত্রপাত। আমি আজ আমার লেখায় একটি প্রিন্ট পত্রিকার সরকারি অনুমোদন, সরকারি মিডিয়া তালিকাভুক্তকরণ প্রক্রিয়া এবং ১৯৭৩ সালের ছাপাখানা আইন মোতাবেক পরিচালনার বিষয় গুলো যথাসম্ভব তুলে ধরার চেষ্টা করব। সম্মানিত পাঠকবৃন্দের নিকট অনুরোধ রইল বর্তমানে আমাদের দেশের অনলাইন ভিত্তিক সংবাদমাধ্যমের সাথে প্রিন্ট পত্রিকার তুলনামূলক পার্থক্য করে নিয়ে বিচার বিবেচনা করার । উল্লেখ্য যে, ঢাকা ডিসি অফিস থেকে অনুমোদনপ্রাপ্ত ও ঢাকা থেকে প্রকাশিত পত্রিকাকে জাতীয় পত্রিকা বলা হয় ।
একটি প্রিন্ট পত্রিকা যেসব প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অনুমোদনপ্রাপ্ত হয় তার উল্লেখযোগ্য কিছু প্রক্রিয়া এখানে তুলে ধরা হল :
১. ডিসি অফিসের নির্দেশনা মোতাবেক আবেদন করার পরে নামের ছাড়পত্রের জন্য ফাইল ডিএফপি ( চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর ) এ পাঠানো হয় । প্রস্তাবিত নামে আর কোন পত্রিকা না থাকলে এবং অন্যান্য বিধি বিধান যাচাইঅন্তে নামের ছাড়পত্র দেয়া হয় । নামের ছাড়পত্রে লেখা থাকে চূড়ান্ত অনুমোদনের পূর্বে প্রস্তাবিত বা যেকোন পদ্ধতিতে কোন সংখ্যা ছাপানো যাবে না এবং আগামী ১ (এক) বছরের মধ্যে চূড়ান্ত অনুমোদন পেতে ব্যর্থ হলে উক্ত নামের ছাড়পত্র বাতিল বলে গণ্য হবে।
২. সস্পাদক ও প্রকাশক একজন হলে একজনের এবং একাধিক ব্যক্তি হলে সকলের ভিন্ন ভিন্ন ভাবে এসবি, ডিএসবি ও থানা ভেরিফিকেশন এবং অভিজ্ঞতা ও শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ তদন্তের জন্য তদন্তকারীগণ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে যাবে ।
৩. সম্পাদকের শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ এবং সাংবাদিকতায় ১০ থেকে ১২ বছরের অভিজ্ঞতার স্বপক্ষে প্রত্যয়নপত্র দিতে হবে।
৪. প্রকাশকের ব্যাংক ব্যালেন্স ঢাকায় হলে অর্থাৎ জাতীয় পত্রিকার জন্য মফস্বলের প্রায় ৬ (ছয়) গুন দেখাতে হবে । আয়কর রিটার্ন দাখিলের সত্যায়িত ফটোকপি দিতে হবে।
৫. অফিস থাকতে হবে । নিজস্ব মালিকানা হলে দলিল আর ভাড়ায় হলে বাড়িওয়ালার সাথে ষ্ট্যাম্পে ভাড়ার ডিট দিতে হবে।
৬. প্রেস নিজের না থাকলে ভাড়াকৃত প্রেসের সাথে ষ্ট্যাম্পে চুক্তিপত্র দিতে হবে । প্রেসের মালিককে ডিসি অফিসে স্বশরীরে গিয়ে নির্দিষ্ট ফরমে স্বাক্ষর করতে হবে।
উপরোক্ত বিষয় সমূহের রিপোর্ট পজেটিভ হলেও পত্রিকার অনুমোদন পেতে সরকারি দলের একাধিক এমপি, মন্ত্রীর সুপারিশ প্রয়োজন হবে। এছাড়া উপরোক্ত প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হতে যত টেবিলে যতবার ফাইল যাবে ততবার বক্শিস নামক ঘুষ দিতে হবে নতুবা ফাইল মাসের পর মাস এক স্থানেই পড়ে থাকবে। সমস্ত চড়াই উৎড়াই পেরিয়ে চূড়ান্ত অনুমোদন পেলেও একটানা ৯০ (নব্বই) দিন ছাপা বন্ধ থাকলে ১৯৭৩ সালের ছাপখানা আইন অনুযায়ী অনুমোদন বাতিল বলে গণ্য হবে ।
সরকারি মিডিয়া তালিকায় অর্ন্তভুক্তকরণ: পত্রিকার অনুমোদন পেলেই সেই পত্রিকায় সরকারী কোন বিজ্ঞাপন ছাপা যাবে না । এছাড়াও মালিকপক্ষ অন্যান্য কিছু সরকারি সুযোগ সুবিধা পাবেন না যতক্ষণ পর্যন্ত উক্ত পত্রিকাটি সরকারি মিডিয়া তালিকায় অর্ন্তভুক্ত না হবে । আর একটি প্রিন্ট পত্রিকার মালিক হওয়ার চেয়েও ঐ পত্রিকাটি সরকারী মিডিয়া তালিকায় অর্ন্তভুক্ত করার প্রক্রিয়া অরো জটিল, ব্যয়বহুল ও সময় স্বাপেক্ষ। অনেকে ভুল করে পত্রিকার সরকারি অনুমোদন ও সরকারি মিডিয়া তালিকায় অর্ন্তভুক্তকরণ এই দু’টি পৃৃথক বিষয়কে একই মনে করে থাকেন, আসলে এটা ঠিক নয়। আমরা যারা প্রিন্ট পত্রিকার মালিক তারা আমাদের ব্যবসায়ীক প্রয়োজনে সবকিছু জেনে শুনেই সমস্ত জটিল ও কঠিন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে সরকারি মিডিয়া তালিকায় নাম লেখাতে সাধ্যানুযায়ী আপ্রান চেষ্টা করে থাকি।
আসুন এবার সরকারী মিডিয়া তালিকায় অর্ন্তভুক্ত হতে যেসব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হয় তম্মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি প্রক্রিয়া জেনে নেয়া যাক্ :
১. বিরতিহীনভাবে ৯০ (নব্বই) দিন ছাপানোর পর প্রতিদিনের ১ কপি করে একসাথে ৯০ (নব্বই) সংখ্যা দিয়ে ডিএফপি (চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর) এ নিয়মিত প্রকাশনার স্বপক্ষে ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করতে হয়। নিয়মিত প্রকাশনার স্বপক্ষে এই দপ্তরের ছাড়পত্র পাওয়া গেলে একইভাবে নিয়মিত প্রকাশনার স্বপক্ষে ডিসি অফিসের প্রত্যয়নপত্র/ছাড়পত্র সংগ্রহ করতে হবে। কোন কারণে পজিটিভ রিপোর্ট না পেলে ফাইল এখানেই থেমে থাকবে । পজিটিভ রিপোর্ট পাওয়ার পরে সমস্ত কাগজপত্র প্রকাশিত ৯০ (নব্বই) সংখ্যার সাথে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়ে ক্লিয়ারেন্সের জন্য আবেদন করতে হবে।
২. এরপর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয় এসবি, এনএসআই সহ সংশ্লিষ্ট যেকোন দপ্তর দিয়ে তদন্ত করাতে পারেন । তদন্ত রিপোর্ট পজিটিভ হলে ফাইল পরবর্তী কার্যক্রমের জন্য ডিএফপি (চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর) এ প্রেরণ করা হবে ।
৩. ডিএফপি (চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর) এবার ফাইল পাওয়ার পরে তাদের চূড়ান্ত তদন্ত প্রক্রিয়া চালাবে । যেমন, হটাৎ করে না বলে অফিসে এসে ষ্টাফ সহ সমস্ত রেজিষ্ট্রার, হকার-এজেন্টদের নাম ঠিকানা যাচাই বাছাই করবে । আবার কখনো রাতে না বলে প্রেসে গিয়ে দেখবে প্রতিদিন ন্যূনতম ৬,০০০ (ছয় হাজার) কপি ছাপা হচ্ছে কিনা ?
৪. ৬,০০০ (ছয় হাজার) কপির অধিক ছাপা হলে সেই ভিত্তিতে বিজ্ঞাপন রেট নির্ধারণ করবে।
৫. এছাড়াও আরো কিছু বিষয় যেমন,ঢাকায় সংবাদপত্র বিক্রয়ের দোকানে পত্রিকা পাওয়া যায় কি না ,দেয়াল পেষ্টিং হয় কি না, বিট পিয়ন নিয়মিত ডিএফপি এবং ডিসি অফিসের নিবন্ধন শাখা, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রাজ শাখা-৩, এসবি, এনএসআই সহ সরকারি কিছু অফিসে প্রতিদিন পত্রিকা জমা দিয়ে পিয়ন বুকে স্বাক্ষর নিচ্ছে কি না ? এসব পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পরীক্ষা নীরিক্ষা করবে।
এতসব জটিল, ব্যয়বহুল ও সময় স্বাপেক্ষ প্রক্রিয়া শেষ করে সরকারি মিডিয়া তালিকায় অর্ন্তভুক্ত হলেও তা আবার বাতিল হতে পারে। জাতীয় পত্রিকার ক্ষেত্রে ৬ (ছয়) মাস এবং মফস্বল পত্রিকার জন্য ১ (এক) বছর অন্তর অডিট রিপোর্ট পজেটিভ না হলে এবং ১৯৭৩ সালের ছাপাখানা আইনের পরিপন্থি কোন কার্যকলাপ যদি ধরা পড়ে তবে মিডিয়া বাতিল হওয়ার সম্ভাবনা আছে। কোন কারণে অফিসের স্থান পরিবর্তন করলে তা ডিসি অফিসে লিখিতভাবে জানিয়ে ডিএফপি সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অনুলিপি দিতে হবে ।
বাংলাদেশে নিউজ পোর্টালের সাথে প্রিন্ট পত্রিকার তুলনামূলক পার্থক্য : একটি নিউজ কয়েক হাত কিংবা টেবিল ঘুরে ছাপার উপযোগী হয়ে ছাপাখানায় যায়। কোন কারণে অনিচ্ছাকৃত ভুল ছাপা হয়ে পাঠকের হাতে চলে গেলে তা আর সংশোধনের সুযোগ থাকে না । পক্ষান্তরে নিউজ পোর্টালে কোন ভুল নিউজ আপলোড হলে তা ১থেকে ২মিনিটেই সংশোধন করা সম্ভব। নিউজ পোর্টাল অপেক্ষা প্রিন্ট পত্রিকা অত্যন্ত ব্যয় বহুল ও জটিল প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পরিচালনা করতে হয় । প্রিন্ট পত্রিকার কর্তৃপক্ষকে কাগজ ক্রয়, প্রতিদিন ছাপানোর ব্যয় এবং ছাপানোর পরে জেলা-উপজেলা পর্যায়ে পত্রিকা পৌঁছানোর ঝামেলা ও ব্যয় বহন করতে হয়, যা কোন নিউজ পোর্টালের ক্ষেত্রে প্রয়োজন নাই। এদিক থেকে বিচার করলে একটি প্রিন্ট পত্রিকা একদিনের ছাপানোর ব্যয়ে একাধিক নিউজ পোর্টালের মালিক হওয়া সম্ভব। অধিকাংশ সরকারি মিডিয়াভুক্ত প্রিন্ট পত্রিকার অনলাইন ভার্সন, ইপেপার রয়েছে। পক্ষান্তরে কোন নিউজ পোর্টালের প্রিন্ট ভার্সন আছে বলে দাবী করার সুযোগ নাই।
বাংলাদেশে এখনো উন্নত বিশ্বের ন্যায় অধিকাংশ লোক ইন্টারনেট ব্যবহারে সুযোগ পাচ্ছে না। উন্নত বিশ্বের তুলনায় আমাদের দেশে ইন্টারনেট ব্যবহার একদিকে যেমন ব্যয়বহুল অন্যদিকে তেমনি অপ্রতুল। এদেশে পত্রিকা পড়তে পারে কিন্তু ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারে না এমন লোকের অভাব নাই । আবার অনেকের ইন্টারনেট ব্যবহারের ইচ্ছা থাকলেও সর্বত্র সহজলভ্য নয় বিধায় ব্যবহার করতে পারছে না। আর্থ সামাজিক ও পারিপার্শ্বিক বিবেচনায় বলা যায়, আমাদের দেশে অনলাইন ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম যতই চালু থাকুক প্রিন্ট পত্রিকার চাহিদা ও আবেদন কখনোই শেষ হবে না ।
সম্প্রতি তথ্য মন্ত্রণালয় অল্পসংখ্যক অনলাইন নিউজ পোর্টালের নিবন্ধন দিয়েছে । এখন কথা হলো নিবন্ধন থেকে বাদ পড়া অনলাইন ভিত্তিক সংবাদমাধ্যমের মালিকপক্ষ ও তাদের কার্ডধারী ষ্টাফদের কি হবে ? যারা নিবন্ধন পেয়েছেন তারা নি:সন্দেহে সৌভাগ্যবান, তাদেরকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। আর যারা নিবন্ধন পাওয়ার বিবেচনায় কিংবা তদন্তে রিজেক্ট হয়েছেন তাদের সকল কার্যক্রম বন্ধ করার জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে বিশেষভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি। তা না করা হলে এসব অবৈধ প্রতিষ্ঠান গুলো আইডি কার্ড বিক্রির মাধ্যমে তথাকথিত কার্ডধারী অযোগ্য সাংবাদিক তৈরী করে সংবাদমাধ্যম ও সাংবাদিকতা পেশার বারটা বাজিয়ে ছাড়বে । এ বিষয়ে যারা নিবন্ধন পেয়েছেন তারাও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিবেন বলে দৃঢ়ভাবে প্রত্যাশা করছি । কেননা, তা না হলে আপনাদের সাথে নিবন্ধন থেকে বাদ পড়া অবৈধ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে পার্থক্য কি থাকল ? যারা নবীন কিন্তু সাংবাদিকতা পেশায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চান তারা অবশ্যই যাচাই বাছাই পূর্বক সিদ্ধান্ত নিন, নতুবা প্রতারিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
লেখক: সাংবাদিক, কলামিষ্ট, মানবাধিকার কর্মী ও
সম্পাদক- জাতীয় দৈনিক বিশ্ব মানচিত্র ।
+৮৮ ০১৬৮৪ ২৯৪০৮০, +৮৮ ০১৭২৬ ৮৯৬২৮৯

তথ্যটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে শেয়ার করুন

More News Of This Category