1. mahfujpanjeree@gmail.com : Mahfuzur-Rahman :
  2. admin@samagrabangla.com : main-admin :
  3. mahmudursir@gmail.com : samagra :

কারেন্ট না ভোল্টেজ? কোনটি প্রাণঘাতী?

  • Update Time : শনিবার, জুন ৬, ২০২০

চলুন জানার চেষ্টা করি কোনটি প্রাণঘাতী? কারেন্ট না ভোল্টেজ?

কালের বিবর্তনে আমরা আধুনিক সভ্য সমাজে উপনীত হয়েছি, যার পিছনে মূল অবদান হল বিদ্যুতের।

(ছবিসূত্র : 1 Volt and 230 Amperes Or 230 Volts And 1 Ampere – Which Will Kill You?)

এই বিদ্যুৎ কে আমরা ছোটোবেলা থেকেই কারেন্ট নামে চিনি, ভোল্টেজ কিন্তু কেউ বলিনা। মানুষ যাকে ভয় পায় তার নামে গুণগান একটু বেশিই করে। আমাদের বৈদ্যুতিক সংযোগে কারেন্টের সাথে সাথে কিন্তু ভোল্টেজ ও থাকে। আমরা চাইলে ভোল্টেজ নামেও ডাকতে পারতাম। কিন্তু, ওই যে ভয়, আমরা কারেন্টকেই ভয় পাই ভোল্টেজ কে নয়। কিন্তু কেন?

( ছবিসূত্র : Which One Kills – Current or Voltage and Why? Amps vs Volts)

আগে আমরা কিছু কথা জেনে নিই। আমরা জানি বিদ্যুৎ কে ইংরেজীতে আমরা ইলেক্ট্রিসিটি (Electricity) বলে থাকি। ইলেকট্রন থেকেই ইলেকট্রিসিটি নামটি এসেছে। বৈদ্যুতিক লাইন বা বর্তনী দিয়ে ইলেকট্রন চলাচল করে। এই ইলেকট্রন কে চলতে সাহায্য করে ভোল্টেজ৷ এটা অনেকটা জলের পাইপের মত। চাপ না থাকলে যেমন জল নির্গত হয় না ঠিক তেমনি।

( ছবিসূত্র : Amps. They’re everyone’s b*tch.)

ভোল্টেজ না থাকলে ইলেকট্রন ও চলাচল করবেনা। ইলেকট্রনের প্রবাহকে মানে কারেন্টকে আমরা Ampere এককে মেপে থাকি আর ভোল্টেজকে ভোল্ট এককে। এখানে ভোল্টেজকে যদি আমরা প্রেসার বা চাপের সাথে তুলনা করি অপরদিকে কারেন্টকে আমরা ইলেকট্রনের ঘনত্বের সাথে তুলনা করতে পারি। ইলেকট্রনের ঘনত্বই আমাদের মৃত্যুর জন্য দায়ী। তুলনা স্বাপেক্ষে বলা যায়, ১০০০ ভোল্ট আর ১০০ ভোল্ট বিদ্যুতের মধ্যে তেমন কোনো পার্থক্য (বাঁচা আর মারা যাওয়ার পার্থক্য) নেই, কিন্তু সামান্য পরিমাণ কারেন্ট মানে কয়েক Ampere কারেন্টের পরিমাণ বিশাল পার্থক্য গরে দিতে পারে। কিন্তু, মৃত্যুর জন্য ভোল্টেজ ও পরোক্ষভাবে দায়ী, কারণ ভোল্টেজই কারেন্টকে তার গন্তব্যে পৌঁছে দেয়।

( ছবিসূত্র: Volt Cartoons and Comics)

আমরা এখন কিছু পরিমাপ দেখবো যাতে আমাদের ধারণাটা আরেকটু পরিষ্কার হয়।

• ১ থেকে ১০ মিলি এম্পিয়ার – খুব সামান্য ঝটকা অনুভুত হয় বা অনেকসময় হয়োনা।

• ১০ থেকে ২০ মিলি এম্পিয়ার – খুব ভালোই একটা ঝটকা লাগে শরীরে কিন্তু পেশী সচল থাকে।

• ২০ থেকে ৭৫ মিলি এম্পিয়ার- খুব মারাত্মক ঝটকা লাগে এবং পেশী অচল হয়ে যায়।

(ছবিসূত্র : How Does Electrocution Kill You? | RealClearScience)

এর অত্যধিক হলে সেই ঝটকা টা হৃৎপিণ্ডে চলে যায় আর যা ডেকে আনে মৃত্যু।

কি হবে যখন ১ এম্পিয়ার বিদ্যুৎ শরীরের ভিতর প্রবেশ করে! ১ এম্পিয়ার বিদ্যুৎ মানে প্রতিসেকেন্ডে ৬ মিলিয়ন ট্রিলিয়ন ইলেক্ট্রনের প্রবাহ। তারমানে তখন প্রতি সেকেন্ডে ৬ মিলিয়ন ট্রিলিয়ন ইলেকট্রন শরীরে প্রবেশ করবে। ( মিলিয়ন ট্রিলিয়ন কিন্তু)। এই পরিমাণ ইলেকট্রন আমাদের স্নায়ুতন্ত্র পুরোপুরি ধ্বংস করে দিতে দেয়। আমাদের হৃৎপিন্ড কাজ বন্ধ করে দেয় আর শরীরে মারাত্মক ক্ষত সৃষ্টি করে।

রাস্তায় বৈদ্যুতিক খুঁটির কাছে অনেকে সাইনবোর্ড দেখতে পাবেন যাতে লিখা থাকে ” Danger, High voltage”। কিন্তু এতক্ষণ তো আপনি জানলেন যে কারেন্ট ই আমাদের মৃত্যুর জন্য দায়ী তাহলে ভোল্টেজ লিখলো কেনো। তার কারণ আপনি রাস্তায় যে বৈদ্যুতিক খুঁটি দেখেন ওগুলো হলো এসি প্রবাহের ( দিক পরিবর্তী) লাইন। ওগুলো তে ওই পরিমাণ ভোল্টেজ যে কারেন্ট প্রবাহিত হয় তা কাওকে তৎক্ষণাৎ মৃত্যুমুখে ঠেলে দেয়। ভোল্টেজ লিখার পিছনে মূল কারণ হলো খুঁটিতে যে পরিমাণ ভোল্টেজ থাকে তার তুলনায় কারেন্ট অনেক নগণ্য। কিন্তু এই নগণ্য কারেন্টই বিপজ্জনক।

আরেকটা অন্যতম কারণ হল কম্পন। এই যে ইলেকট্রনের প্রবাহের একটা কম্পন রয়েছে, যার পরিমাণ ৫০ থেকে ৬০ হার্জ। এই পরিমাণ কম্পন আমাদের হৃৎপিন্ডের উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে, যা মৃত্যুর জন্য দায়ী।

তথ্যটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে শেয়ার করুন

More News Of This Category