January 28, 2023, 5:05 am
সারা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ব্যাপকভাবে মানুষকে করোনাভাইরাসের টিকা দেয়া হচ্ছে। কিন্তু তার পরও দেখা যাচ্ছে যে টিকা-নেয়া লোকেরাও আবার ভাইরাসে সংক্রমিত হচ্ছে।
সারা পৃথিবীতে অনেক দেশেই – যেগুলোতে ব্যাপক সংখ্যায় মানুষকে টিকা দেয়া হয়েছে – সেখানেও নতুন করে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ঢেউ দেখা যাচ্ছে। এসব দেশের মধ্যে আছে যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, আর্জেন্টিনা, ও ব্রাজিল।
এ দেশগুলোতে ইদানীং করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রেকর্ড পরিমাণ বেড়ে যাবার একটা কারণ: ডেল্টা এবং অমিক্রনের মত অতিসংক্রামক করোনাভাইরাসের ধরন।
কিন্তু প্রশ্ন হলো: টিকা নেবার পরও বিপুল পরিমাণ মানুষের মধ্যে সংক্রমণ হচ্ছে কেন?
অনেকের মনে হতে পারে যে টিকায় হয়তো কোন কাজ হচ্ছে না। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা ব্যাপারটা বাখ্যা করে বলছেন – কেন কোভিড-১৯এর টিকা নেয়া অত্যন্ত জরুরি।
এ দেশগুলোতে বিজ্ঞানী, ডাক্তার এবং পেশাদার স্বাস্থ্যসেবাপ্রদানকারীরা এখনো বিভিন্ন টিকার ওপর নির্ভরতা কমাননি। এসব টিকা সারা বিশ্বে পরীক্ষিত এবং অনুমোদিত হয়েছে – এবং এটা প্রমাণিত হয়েছে যে এগুলো সংক্রমণের বিরুদ্ধে সুরক্ষা দিতে পারে।
বিবিসি এ নিয়ে সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ রেনাটো কেফুরির সাথে কথা বলেছে।
তার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল – এখন প্রচলিত টিকাগুলোর কার্যকারিতা এবং টিকা নেয়া লোকেরাও কেন ভাইরাসে সংক্রমিত হতে পারেন এবং রোগ ছড়াতে পারেন – সে সম্পর্কে।
রেনাটো কেফুরি বলছেন, প্রথম যে করোনাভাইরাস-রোধী টিকাগুলো বাজারে এসেছিল – যেমন ফাইজার বা এ্যাস্ট্রাজেনেকা ইত্যাদি – এগুলোর লক্ষ্য ছিল কোভিড-১৯এ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ার ঝুঁকি কমানো, যে পর্যায়ে আক্রান্তদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ও মারা যাবার সম্ভাবনা থাকে।
“আসলে এই টিকাগুলো কোভিডের অধিকতর বিপজ্জনক ধরনগুলোর বিরুদ্ধে অনেক ভালোভাবে সুরক্ষা দিতে পারে – অপেক্ষাকৃত মৃদু বা নিরীহ ধরনগুলোর তুলনায় যেগুলোতে অনেক সময় কোন উপসর্গও থাকে না” – ব্রাজিলের টিকাদান সোসাইটির পরিচালক মি. কেফুরি বলছিলেন – “কোভিড যত গুরুতর হবে টিকার কার্যকারিতাও ততই বেশি হবে।”
তবে ডা. কেফুরি বলছেন, এই সমস্ত তথ্যপ্রমাণ থেকে আসলে টিকা নেয়ার গুরুত্বই প্রমাণিত হচ্ছে – বিশেষ করে অমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট এবং নতুন করে সংক্রমণ বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে।
“কেউ যদি মনে করেন যে টিকা নেবার কোন দরকারই নেই, কারণ সবাই শেষ পর্যন্ত অসুস্থ হবেই – তাহলে তা হবে চরম ভুল,” বলছেন তিনি।
“এই টিকা করোনাভাইরাসকে একটি অপেক্ষাকৃত সরল রোগে পরিণত করতে সফল হচ্ছে – যা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ঘরে থেকেই চিকিৎসা করা সম্ভব।”
এই বিশেষজ্ঞ বলছেন, “এই মহামারি থেকে আমরা বেরিয়ে আসতে পারি শুধু একভাবে – সেটা হলো শিশুরাসহ দেশের সমগ্র জনগোষ্ঠীকে উচ্চহারে টিকা দেয়া এবং মাস্ক পরা, হাত ধোয়া, ও মানুষের ভিড় ঠেকানোর মত নিয়মগুলো মেনে চলা।”