1. mahfujpanjeree@gmail.com : Mahfuzur-Rahman :
  2. admin@samagrabangla.com : main-admin :
  3. mahmudursir@gmail.com : samagra :

কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক আর নেই

  • Update Time : মঙ্গলবার, নভেম্বর ১৬, ২০২১

প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

সোমবার রাত নয়টায় রাজশাহী শহরে নিজ বাসভবনে তাঁর মৃত্যু হয়। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক মলয় ভৌমিক মারা যাবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এই কথাসাহিত্যিকের মৃত্যুতে শোক। জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

৮২ বছর বয়সী হাসান আজিজুল হক বেশ কিছুদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। গত ২১ আগস্ট এআজিজুলয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তাঁকে ঢাকায় আনা হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) দুই সপ্তাহের বেশি সময় চিকিৎসা নেন তিনি। কিছুটা সুস্থ হওয়ার পর ৯ সেপ্টেম্বর তাঁকে রাজশাহীতে ফিরিয়ে নেওয়া হয়।অধ্যাপক মলয় ভৌমিক জানিয়েছেন, সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য আগামীকাল মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় হাসান আজিজুল হকের মরদেহ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে নেওয়া হবে। পরে বাদ জোহর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ প্রাঙ্গণে জানাজা শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হবে।

হাসান আজিজুল হকের কিছু রেখে যাওয়া সৃতিঃ 

হাসান আজিজুল হক ১৯৩৯ সালের ২ ফেব্রুয়ারি বর্তমান ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার যবগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা মোহাম্মদ দোয়া বখশ্ ও মাতা জোহরা খাতুন। জীবনের অধিকাংশ সময় হাসান আজিজুল হক রাজশাহীতে কাটিয়েছেন।

হাসান আজিজুল হক ১৯৫৪ সালে যবগ্রাম মহারানী কাশীশ্বরী উচ্চ ইংরেজি বিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিকুলেশন এবং ১৯৫৬ সালে খুলনার শহরের অদূরে দৌলতপুরের ব্রজলাল কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন। প্রথম যৌবনেই ছাত্ররাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েছিলেন তিনি। রাজনীতি করার কারণেই পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর নির্যাতন ভোগ করতে হয়েছিল তাঁকে। ১৯৫৮ সালে রাজশাহী সরকারি কলেজ থেকে দর্শন-এ সম্মানসহ স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৬০ সালে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।

পিএইচডি করতে অস্ট্রেলিয়া গিয়েছিলেন হাসান আজিজুল হক। কিন্তু বিদেশের পরিবেশ ভালো না লাগায় ডিগ্রি শেষ না করেই দেশে ফিরে আসেন তিনি।

হাসান আজিজুল হক রাজশাহী কলেজে পড়ার সময় ১৯৬০ সালে সিকান্‌দার আবু জাফর সম্পাদিত ‘সমকাল’ পত্রিকায় ‘শকুন’ শিরোনামে তাঁর একটি গল্প প্রকাশ হয়। এই গল্পের মাধ্যমেই সাহিত্যিক মহলের নজরে আসেন তিনি।

১৯৭৩ সালে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০০৪ সাল পর্যন্ত একনাগাড়ে ৩১ বছর অধ্যাপনা করেন। এর পর থেকে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ব পাশে নগরের চৌদ্দপায় আবাসিক এলাকায় বসবাস করতেন।

হাসান আজিজুল হকের প্রথম গল্পগ্রন্থ ‘সমুদ্রের স্বপ্ন শীতের অরণ্য’–এর প্রথম গল্প ‘শকুন’। প্রায় অর্ধশতক ধরে হাসান আজিজুল হক লিখেছেন। তাঁর লেখা ছোটগল্প ‘আত্মজা ও একটি করবী গাছ’ ব্যাপকভাবে পাঠক সমাদৃত। ‘আগুনপাখি’ নামে হাসান আজিজুল হকের একটি উপন্যাস প্রকাশিত হয় ২০০৬ সালে। উপন্যাসটি প্রথম আলো বর্ষসেরা বইয়ের স্বীকৃতি পায়। এ উপন্যাসের জন্য তিনি ২০০৮ সালে কলকাতা থেকে আনন্দ সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন। তাঁর দ্বিতীয় উপন্যাস ‘সাবিত্রী উপাখ্যান’ ২০১৩ সালে প্রকাশিত হয়।

হাসান আজিজুল হকের লেখা গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে ‘তৃষ্ণা’, ‘উত্তরবসন্তে’, ‘বিমর্ষ রাত্রি, প্রথম প্রহর’, ‘পরবাসী’, ‘আমৃত্যু’, ‘আজীবন’, ‘জীবন ঘষে আগুন’, ‘খাঁচা’, ‘ভূষণের একদিন’, ‘ফেরা’, ‘মন তার শঙ্খিনী’, ‘মাটির তলার মাটি’, ‘শোণিত সেতু’, ‘ঘরগেরস্থি’, ‘সরল হিংসা’, ‘খনন’, ‘সমুখে শান্তির পারাবার’, ‘অচিন পাখি’, ‘মা-মেয়ের সংসার’, ‘বিধবাদের কথা’, ‘সারা দুপুর’ ও ‘কেউ আসেনি’।

সাহিত্যে অবদানের জন্য হাসান আজিজুল হক ১৯৭০ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার পান। ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশ সরকার তাঁকে একুশে পদকে ভূষিত করে। ২০১৯ সালে তাঁকে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়া হয়।

আরো পড়ুনঃ

হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিন আজ

কারণ দর্শানো নোটিশের জবাব দিবেন কিভাবে ?

 

তথ্যটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে শেয়ার করুন

More News Of This Category