November 30, 2023, 4:57 am
মোটা স্বাস্থ্য চিকন করার প্রাকৃতিক উপায়
How to Lose Weight Fast, Simple Ways to Lose Belly Fat.
মোটা বা স্থুলতা (Obesity) কি?
How to Lose Weight Fast, Simple Ways to Lose Belly Fat.
স্থুলতা: (Obesity) বলতে শরীরের এক বিশেষ অবস্থা।যা অতিরিক্ত মেদ (Fat) বা চর্বি সঞ্চিত দেহাবরণকে বুঝায়। আর অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতা তখনই বলা হবে যখন শরীরে চর্বির পরিমাণ বেড়ে যাবে। মানুষের শরীরে স্বাভাবিক অবস্থায় সঞ্চিত চর্বি মোট ওজনের প্রায় ১৪ শতাংশ থাকে। সব ক্ষেত্রে দেহের ওজন বেশি হলেই স্থূলতা বলা যায় না। যেমন একজন বডি বিল্ডারের (Body builders) দেহের ওজন বেশি থাকতে পারে তার শরীরে সুশৃঙ্খলভাবে বর্ধিত মাংসপেশির জন্য, যা হয়তো ওজন নির্ধারণের ফর্মুলায় ফেললে ওজনাধিক্যের মধ্যে নাও হতে পারে। সেক্ষেত্রে থাকে কখনোই স্থূলতা বলা যাবে না। সে জন্য দেহের জমাট বাঁধা চর্বি পরিমাপের মাধ্যমে ওজনাধিক্য বা স্থূলতা নির্ণয় করা শ্রেয়।
মোটা বা স্থুল কেন হয়?
যেভাবে হয়: অতিরিক্ত ওজন হওয়ার পেছনে মূল কারণ হচ্ছে শরীরের প্রয়োজন থেকে বেশি খাবার খাওয়া অর্থাত্ বেশি ক্যালোরির (Calories) খাবার খাওয়া। শরীরের প্রয়োজন মেটানোর পর বাড়তি খাবারগুলো চর্বি হয়ে দেহকোষে জমা হয়। কিছু চর্বি শরীরে জমা থাকা দরকার। কারণ প্রয়োজনে শক্তি সরবরাহ করে। কিন্তু চর্বি বেশি জমা হলেই ওজনাধিক্য তৈরি হবে। আর এ অতিরিক্ত ক্যালরি বার্ন (Calorie burn )না করলেই ওজন বেড়ে যাবে। তাছাড়া সারাদিন শারীরিক পরিশ্রমের অভাবে ওজন বাড়ে বা স্থূল হয়।
স্থুল হওয়ার ক্ষেত্রে চর্বির উৎস গুলো কি কি?
চর্বি জাতীয় খাবার: ১.ঘি ২.মাখন ৩.দই ৪.পণির ৫.ক্ষীর ৬.গরুর দুধ ৭.গরুর মাংস ৮.খাসীর মাংস ৯.মুরগীর মাংস ১০. ভাজা বাদাম ১১. নোনতা বিস্কুট ১২.মিস্টি বিস্কুট ১৩. তেল ১৪.অ্যালকোহল যুক্ত পানীয়।আমরা সাধারণত বুঝতে পারি না কতটুকু চর্বি আমরা গ্রহণ করছি। মোটামুটি ৬০ শতাংশ চর্বি আমরা খাওয়ার সময় বুঝতে পারি না (লুকানো চর্বি)। যেসব চর্বি চোখে দেখা যায়, সেগুলো আলাদা করা সহজ; যেমন: মাখন, মার্জারিন ও তেল। আপনি যখন আপনার খাবারের চর্বির পরিমাণ নির্ণয় করতে চাইবেন, তখন চোখে দেখা আর না দেখা উভয় ধরনের চর্বিরই খোঁজ নিন।
স্থুল হওয়ার কারণঃ প্রাকৃতিক কারণ:
বংশগত কারণে মোটা হওয়ার প্রবণতা থাকে।বংশ পরম্পরায় জিনগত বৈশিষ্ট্য থেকে প্রাপ্ত গুণাবলী থাকার কারণে অনেকে স্থূল হয়। তবে শিশুর বয়স ও লিঙ্গ অণুযায়ী স্বাস্থ্যবান শিশুদের ওজনের তারতম্য ঘটে। শিশুকাল ও বয়ঃসন্ধিকালের স্থূলতা কখনোই প্রকৃত সংখ্যা্ দিয়ে বিশ্লেষণ করা যায় না, এর সঙ্গে ঐতিহাসিকভাবেই স্বাভাবিক গোষ্ঠীর সম্পর্ক রয়েছে, যেমন এক্ষেত্রে স্থূলতা মাপতে গেলে বডি মাস ইনডেক্স (BMI)-র বেশি হতে পারে।
স্থুল হওয়ার কারণঃ অভ্যাস গত কারণ:
বেশি বেশি খেয়ে বেশি বেশি ঘুমালেই এমনি এমনি ওজন বাড়ার কথা। ওজন বাড়ার অন্যতম কারণ অতিরিক্ত খাওয়া। শরীরে খাবারের প্রয়োজন নেই অথচ ভালো খাবার দেখলে খেতে ইচ্ছে করে বলে অনেকে সারা দিন খান। আর যারা অলস জীবনযাপনে অভ্যস্ত বা ঘাম ঝারতে অনাগ্রহী। তাদেরও স্থূল হওয়ার সম্ভাবনা আছে। মূলত অতিরিক্ত ক্যালোরিযুক্ত খাদ্যগ্রহণ, কায়িক শ্রমের অভাব ইত্যাদি।
অতিরিক্ত স্থুলতার লক্ষণ সমূহ:
অতিরিক্ত ওজন যাঁদের, তাঁদের রক্তে কোলেস্টেরলের (Cholesterol) মাত্রা বেশি থাকে। পেটের সাইজ পূর্ণবয়স্ক একজন পুরুষের ক্ষেত্রে ৩৯.৫ ইঞ্চি ও পূর্ণ বয়স্ক একজন মহিলার ক্ষেত্রে ৩৫.৫ ইঞ্চির চেয়েবেশি হলে।
কেন অতিরিক্ত স্থুলতা কমাবেন?
মেদবিহীন, ছিপছিপে সুন্দর স্বাস্থ্য সবার প্রিয়। আর সবাই চায় নিজের সুগঠিত, সুগড়ন ও কর্মক্ষম শরীর।অতিরিক্ত মোটা হওয়ার জন্য ঠিক ভাবে চলা ফেরা বা কোন ধরনের কাজ কর্ম করতে নানা ধরনের অসুবিধার সৃষ্টি হয়। তাছাড়া নানান জনের কাছে অনেক ধরনের কথা শুনতে হয় মোটা হওয়ার জন্য।
শরীরের ওজন অত্যধিক মাত্রায় বৃদ্ধি পেলে বিভিন্ন ধরনের রোগের সম্ভাবনাও বেড়ে যায়, বন্ধ্যাত্ব (Infertility), উচ্চরক্তচাপ ও হৃদ্রোগে আক্রান্ত হওয়ার শঙ্কা তাঁদের বেশি। বিশেষত কার্ডিওভাসকুলার সংক্রান্ত রোগ, দ্বিতীয় স্তরের মধুমেহ বা ডায়াবেটিস মেলাইটাস টাইপ টু (Diabetes mellitus type-2,), ফলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকিতেও থাকেন। নিদ্রাহীনতা, কয়েক ধরনের ক্যান্সার(Cancer), হাড়ের রোগ যেমন অস্টিওপোরেসিসও তাঁদের বেশি এবং অস্টিওআর্থারাইটিস (Osteoarthritis) জাতীয় রোগের সম্ভাবনা দেখা দেয়। শেষ পর্যন্ত দেখা যায় স্থূলতা আখেরে মানুষের আয়ু কমিয়ে দেয়।
অতিরিক্ত স্থুলতার ফলে যা ক্ষতি হতে পারে:
স্মার্টনেসের (Smartness) যুগে আপনার মোটা শরীর (নারী-পুরুষ নির্বিশেষে), থলথলে ভুড়ি আপনার কর্মক্ষেত্রেও আপনাকে সমস্যায় ফেলতে পারে। স্থূলতার কারণে শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যহানির সম্ভাবনা থাকে। মূল সমস্যার পাশাপাশি আরো বেশ কিছু সমস্যা দেখা দেয়।তাছাড়া অতিরিক্ত মেদ বা চর্বি আপনাকে শুধু বিব্রতই করবেনা, এটা আপনার জন্য ক্ষতিকরও বটে।অতিরিক্ত স্থূলতার কারণে বন্ধ্যাত্ব বা প্রজননগত অসুখেও ভোগতে পারে। আর বন্ধ্যাত্ব শরীরের একটি প্রজননগত অসুখ। যার ফলে শরীরের একটা প্রধান কাজ করা সম্ভব হয় না। সন্তানের জন্ম দেওয়া যায় না।
যে খাবার গুলো গ্রহণ করবেনঃ
কোন ধরনের কাজের সঙ্গে আপনি যুক্ত তার ওপর নির্ভর করবে আপনার পারফেক্ট ডায়েট । আমিষ (Protein) সমৃদ্ধ খাবার যেমন-মাছ, ডাল ইত্যাদি প্রচুর পরিমাণে খান। প্রটিন শরীরের মেটাবলিজম (Metabolism) বাড়ায় ও চর্বি পোড়ায়। আঁশ বহুল খাবার বেশি করে খাবেন।মাংস বা নদীর মাছের পরিবর্তে সামুদ্রিক মাছ বেছে নিন।
ওবেসিটি (Obesity) কমানোর জন্য নুতন খাদ্য তালিকা তৈরি করুন। শর্করাবহুল খাবার গুলো (চাল, আটা দিয়ে তৈরি খাবার, মিষ্টি ফল ইত্যাদি) হিসেব করে খেতে হবে। ওজন কমাবার উপায় হিসেব আঁশযুক্ত খাবার গুলো (ডাল, শাক, সবজি, টক ফল ইত্যাদি) বেশি করে খেতে হবে। ও নানান রকমের মৌসুমি ফল খাদ্যতালিকায় যোগ করুন।ও নানান রকমের মৌসুমি ফল খাদ্যতালিকায় যোগ করুন।
আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট (Unsaturated Fat) (উদ্ভিদ তৈল-সয়াবিন তৈল, সরিষার তৈল) এবং সব ধরনের মাছ খেতে হবে। তাছাড়া চিকিৎসকের পরামর্শে ক্যালসিয়াম সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করতে পারেন। এতে অন্যদের তুলনায় ২.৬% ওজন বেশি কমবে। কারণ ক্যলসিয়ামের কারণে মেটাবোলিজম বৃদ্ধি পায়।টক দইয়ের সাথে দারুচিনি গুঁড়ো মিশিয়ে রোজ এক বাটি খেয়ে দেখুন। দ্রুত ওজন কমবে।
আপনার ডায়েটে (Diet) যাতে ফাইবার, ভিটামিন, মিনারেল এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট (Antioxidants) যথেষ্ট পরিমাণে থাকে সেদিকে লক্ষ রাখুন।প্রতিদিনের ডায়েটে হোলমিল এবং বিভিন্ন ধরনের দানাশস্য রাখুন, কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট, যেমন-হোলহুইট ব্রেড, রাইস, ওটস মিল, হোল মিল পাস্তা, বার্লি, ব্রাউন রাইস খান প্রয়োজনমতো।
চিকন হওয়ার জন্য সাদা ভাতের পরিবর্তে লাল চালের ভাত খেতে পারেন। লাল চালে আঁশ যুক্ত ও শর্করার পরিমাণ কম থাকে। এছাড়া ওজন কমানোর জন্য ব্রাউন রুটি, সালাত খেতে পারেন। এতে দেহে ক্যালোরি কম ঢুকবে ফলে শরীরের জমা চর্বি খরচ হয়ে চিকন হতে সাহায্য করবে।
খাদ্য তালিকায় যতটা সম্ভব অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত মাংস সাথে অন্যান্য আমিষ জাতীয় খাবার পরিহার করবেন। তবে আমিষের অভাব পূরণের জন্যে ডাল খেতে পারেন। ২-৩ ধরনের ডাল এক সঙ্গে রান্না করে খেলে মাছ, মাংস, ডিমের অভাব পূরণ করা যায়। এর ফলে আপনার শরীরের অযাচিত ওজন কমিয়ে চিকন হতে পারবেন।
যে খাবার গুলো পরিহার করবেনঃ
মিষ্টি, গুর, মধুযুক্ত খাবার, মিষ্টি জাতীয় খাবার বাদ দিতে হবে। স্যাচুরেটেড ফ্যাট (Saturated fat) (ঘি, মাখন, চর্বি, ডালডা, মাংস ইত্যাদি) কম খাওয়া।ছাঁকা তেলে ভাজা কিছু খাবেন না; তা সে বেগুন হোক বা পটল ভাজা হোক। আলু, কুমড়ো, কাঁচা কলা খাবেন না। চিনি একেবারেই খাবেন না, প্রয়োজনে সুইটনার চলতে পারে।গরু, খাসির মাংস ও চিংড়ি মাছ মোটেই খাবেন না।ভাজা-পোড়া খাওয়া একদম বাদ দিয়ে দিন।রেস্তোরাঁয় খাওয়া, দাওয়াত কবুল করাও কিছুদিন বন্ধ রাখুন। লো কার্ব এবং হাই প্রোটিন ডায়েটে চলে যান। অর্থাৎ, ভাত কিংবা রুটির পরিমাণ একদম কমিয়ে দিন। প্রয়োজনে একবেলা এগুলো খাবেনই না।
চর্বি যুক্ত খাবার কমিয়ে খান ঃ
♦ চর্বিতে অনেক ক্যালরি আছে। শর্করা বা আমিষের চেয়ে এর পরিমাণ দ্বিগুণ (প্রতি গ্রামে ৯ ক্যালরি), যেটি একজন মানুষ, যে তার ওজন কমাতে চাইছে, তার জন্য একটি দুঃসংবাদ।
♦ অন্য ক্যালরির উৎসের চেয়ে চর্বি দ্রুত দেহে সঞ্চিত হয়। তাই চর্বির গ্রহণ কমানোর মাধ্যমে ওজন কমানোর চেষ্টা করতে পারেন।
♦যে চর্বি আপনি খাচ্ছেন তা আপনার ওজন বাড়ানো ছাড়াও আরও কিছু ভয়াবহ রোগের আশঙ্কা বাড়াতে পারে। তাই স্নেহজাতীয় খাবার কম গ্রহণ করার মাধ্যমে ওজন কমাতে পারবেন এবং সুস্থও থাকতে পারবেন।
♦ খাবারের শেষে মিষ্টিজাতীয় খাবার খাবেন না। চিনি বা মিষ্টিজাতীয় খাবার পরিহার করুন বা একেবারে কমিয়ে খান।
♦ বেশি করে শাকসবজি ও ফলমূল খান। বেশি মাছ খান, চামড়া ছাড়া মুরগি আর কম লাল মাংস খাওয়ার অভ্যাস করুন।
♦ ডিম ভাজি বা পোচ বাদ দিয়ে সেদ্ধ ডিম খান। একটা পুরো ডিমের বদলে দুটো ডিমের সাদা অংশ খেতে পারেন।
♦ রান্নায় বেশি পানি ব্যবহার করুন। তেল, মসলা যতটুকু সম্ভব কমিয়ে দিন।
♦ রান্নায় তেল কমানোর জন্য ননস্টিক প্যান ব্যবহার করতে পারেন।
♦ দই, নারকেল, ঘি, ডালডা দিয়ে রান্না করবেন না। ভুনা খাবার বাদ দিন।
♦ যদি সেটা সবজি না হয় তবে রান্নার সময় খাওয়ার অভ্যাস বাদ দিন।
♦ স্নেহবর্জিত দুধ বেছে নিন কিংবা দুধ জাল দিয়ে ঠান্ডা করার পর সর সরিয়ে নিন।
♦ সালাদে কোনো মাছ বা মাংসের টুকরো মেশাবেন না। বরং কিছু মসলা যোগ করতে পারেন।
♦ তাজা ফল খান, কাস্টার্ড বা জুস হিসেবে নয়।
♦ উচ্চ ক্যালরির খাদ্যগুলো বাদ দিয়ে নিম্ন ক্যালরির খাদ্য দিয়ে একটা সুষম খাদ্য তালিকা তৈরি করুন এবং তা মেনে চলুন।
মিষ্টি বা চিনি দিয়ে তৈরি খাবার খাবেন নাঃ
দুধ-চিনি ছাড়া হলে চা-কফি খেতে কোনো বাধা নেই। কৃত্রিম চিনি ব্যবহার করতে পারেন।চিকন হবার জন্য মিষ্টি বা চিনি দিয়ে তৈরি খাবার, পাকা কলা,আলু খাবেন না। কেননা এ জাতীয় খাবারগুলোর শর্করা আপনার শরীরে অতিরিক্ত ক্যালোরি যোগান দিয়ে দেহের বিভিন্ন অংশে চর্বি জমিয়ে ফেলে। তাই ওজন কমানোর জন্য এগুলো খাওয়ার পরিবর্তে প্রতিদিন ১টি টক জাতীয় ফল খাবেন।
অতিরিক্ত স্থুলতা দুরীকরনের প্রাকৃতিক উপায় সমুহঃ
ওজন কমানোর একমাত্র পন্থা হচ্ছে প্রয়োজনের চেয়ে কম ক্যালরি গ্রহণ করা কিংবা বেশি ক্যালরি গ্রহণ করলে সেটি বার্ন করা। দোকান থেকে কিনে আনা মেডিকেডেট সোপ (Medicaid Soaps), রোগা হওয়ার ওযুধ খেয়ে কোনও লাভ হবে না, বরং এগুলি আপনার শরীরে নানা ধরণের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ঘটাতে পারে। আর তাই সবচেয়ে ভাল উপায় হল ঘরোয়া পদ্ধতিতে যদি আপনি নিজের ওজন কমান। ঘরোয়া এমন বহু উপাদান রয়েছে যার সাহায্যে আপনি আপনার ওজন কমাতে পারেন।ওজন কমানোর উপায় হিসেবে প্রথমেই আমাদের অতিরিক্ত মেদ বা চর্বি কমাতে হবে।নিয়ম অনুযায়ী খাবেন
Warm hot water and lemon: গরম পানি ও লেবু দেহের বাড়তি মেদ ও চর্বি কমাতে অনেক সাহায্য করে এবং এটি ওজন কমানোর সহজ উপায় সমূহের একটি। এক মগ গরম পানিতে ১ ফালি লেবু ও ১ চিমটি লবণ মিশিয়ে নিন। চিকন হওয়ার উপায় হিসেবে চিনি ছাড়া লেবু পানি প্রতিদিন ২বার সকালে ঘুম থেকে উঠে আর রাতে ঘুমাতে যাবার আগে পান করবেন। বাড়তি মেদ কমিয়ে আপনাকে চিকন হতে সাহায্য করবে।
প্রতিদিন রসুন চিবিয়ে খানঃ চিকন হওয়ার জন্য প্রতিদিন সকালে খালি পেটে ১কোয়া রসুন চিবিয়ে খাবেন। এরপর গরম পানিতে চিনি ছাড়া লেবু রস মিশিয়ে পান করবেন লেবুর রস। লেবুর পানি আপনার পেটের চর্বি কমিয়ে চিকন হওয়ার সহজ উপায় হিসেবে দ্বিগুণ দ্রুতগতিতে কাজ করবে। সাথে কাঁচা রসুন খাওয়ার উপকার পাবেন।আপনার সকাল শুরু করুণ লেবুর শরবৎ দিয়ে।তবে একবারে খালি পেটে এসকরবিক জাতীয় এসিড খেলে পেটে গ্যাস সৃষ্টি হতে পারে।
মধু, লেবু ও পানির মিশ্রণ: রোজ সকালে ঘুম থেকে ওঠে ও ঘুমোতে যাওয়ার আগে ১ গ্লাস পরিমান করে, কুসুম গরম ১ গ্লাস পরিমাণ পানিতে ১চা চামচ মধু ও ১চা চামচ লেবুর মিশ্রণ করে পান করুণ। এটি পেটের চর্বি কমানোর জন্য সবচাইতে উপযোগ চিকিৎসা। এভাবে প্রতিদিন চালিয়ে যান ফলে আপনর বিপাক ক্রিয়া স্বাভাবিক হয়ে যাবে এবংমেদ কমেতে থাকবে। তবে একবারে খালি পেটে এসকরবিক জাতীয় এসিড খেলে পেটে গ্যাস সৃষ্টি হতে পারে।
প্রচুর ফল ও সবজি রাখুনঃ প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় চিকন হওয়ার জন্য প্রচুর ফল ও সবজি রাখুন। সকাল ও সন্ধ্যায় নিয়ম করে ফল ও সবজি খাবার চেষ্টা করবেন। এতে আপনার শরীর থাকবে সজিব সাথে পাবে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, মিনারেল ও ভিটামিন। ওজন কমানোর সুবিধাও পাবেন।
রান্নায় উপকারী মসলা ব্যবহার: আপনার রান্নায় ব্যবহার করবেন জিরা ধনিয়া, হলুদ, রসুন, মরিচ, আদা, পেয়াজ ও গোলমরিচ। এসেন্স এর মধ্যে ভ্যানিলা এসেন্স, স্ট্রবেরী এসেন্স খেতে পারবেন। কারণ এসব মসলার রয়েছে অনেক ভেষজ গুনাগুন ও স্বল্প ক্যালরিযুক্ত যা আপনাকে রক্তে শর্করার পরিমাণ কমিয়ে মোটা স্বাস্থ্যের ওজন কমিয়ে চিকন হতে সাহায্য করবে।
নারকেল তেলঃ অনেকেই জানেন না তবে, নারকেল তেল এর মধ্যে অন্যতম। নারকেল তেলের মধ্যে এমন বহু উপাদান আছে যা অতি সহজে আপনার শরীর থেকে অতিরিক্ত মেদ ঝরাতে সাহায্য করে ।নারকেল তেল সারাদিনে ৩ টেবিলচামচ নারকেল তেল সেবন একেবারে ম্যাজিকের (Magic) মতো কাজ করতে পারে। সবচেয়ে ভাল হয় যদি ব্রেকফাস্ট (Breakfast), লাঞ্চ (lunch ) ও ডিনারের (dinner) আগে ১ টেবিল চামচ করে নারকেল তেল খাওয়া যায়। নারকেল তেল, লেবু এবং গরম জল লেবুর মধ্যে ভিটামিন সি ভরপুর রয়েছে। যা হজমে সাহায্য করে। এবং শরীরের টক্সিনকে (Toxin) শরীর থেকে বের করে দেয়। এক গ্লাস গরম জলে ১ টেবিলচামচ লেবুর রস ও ১ টেবিল চামচ নারকেল তেল মিশিয়ে রোজ সকালে খেলে উপকার মিলবেই।মধু ও নারকেল তেল রোগা হওয়ার অন্যতম সহযোগী উপাদান হল মধু। মধু শরীরের হজমক্ষমতাকে বাড়ায়। যার ফলে দ্রুত গতিতে শরীরের অতিরিক্ত ফ্যাটও নষ্ট হতে থাকে। এক গ্লাস গরম জলে সমপরিমাণ নারকেল তেল ও মধু মেশান। খালি পেটে এই মিশ্রণটি খান। এক মাসের মধ্যে তফাৎটা বুঝতে পারবেন। নারকেল তেল ও গ্রীন টি গ্রীন টি আমরা সবাই জানি, রোগা হওয়ার একটা দারুণ উপায়। এ সঙ্গে যদি নারকেল তেল মেশানো যায় তাহলে উপকারিতা দ্বিগুন হারে পেতে পারেন আপনি। গ্রীন টি বানিয়ে তাতে ১ টেবিল চামচ নারকেল তেল মিশিয়ে নিন। এবং গরম গরম এই মিশ্রণটি খেয়ে ফেলুন। আপনার মেদ ঝরানোর পদ্ধতিকে এই মিশ্রণ ত্বরাণ্বিত করবে। নারকেল তেল, মধু, লেবু এবং গ্রীন টি আপনি যদি নারকেল তেল, লেবু, মধু ও গ্রীন টি (Green TEA) একসঙ্গে মিশিয়েও খান তাতেও উপকার পাবেন। তবে এই মিশ্রণ রোজ না খাওয়াই ভাল। ২ দিন অন্তর খেতে পারেন।
ঝাল খাবার খান: অবাক হচ্ছেন? অবাক হবেন না। ঝাল খাবেন কিন্তু ঝালগুলো আসবে দারচিনি, আদা, গোলমরিচ এবং কাঁচামরিচ থেকে। এগুলো রান্নায় ব্যবহার করুন। এই মশলা স্বাস্থ্যকর। এগুলো শরীরের ইনসুলিন সরবরাহ বাড়ায় এবং রক্তের সুগার লেভেল কমাতে সাহায্য করে। তাই এগুলো ডায়াবেটিস রোগীর জন্যও বেশ উপকারী।
জৈবিক ক্রিয়া আবশ্যক :দাম্পত্য জীবনে সফল ভাবে জৈবিক কার্য করুন। সুস্থ্য হওয়ার জন্য একেবারেই উপযুক্ত এই পদ্ধতিটি। জৈবিক র্কাযের ফলে শরীরে ভারসাম্য সঠিক থেকে।
অল্প অল্প করে বারবার খাবেন, অনেকক্ষণ না খেয়ে থেকে অতিরিক্ত ক্ষুধা নিয়ে বেশি খাবার খাবেন না।
অতিরিক্ত স্থুলতা দুরীকরনের কৌশল গত উপায় সমুহঃ
খাবার খাওয়ার আগে সব সময় এক গ্লাস পানি পান করুন। এতে দ্রুত ও দীর্ঘস্থায়ীভাবে আপনার পেট ভরার অনুভুতি আসবে।এছাড়া জাঙ্ক ফুড একেবারেই খাবেন না। যেমন ক্রিম বিস্কুট, বার্গার ইত্যাদি। যতটা পারবেন বাড়ির তৈরি খাবার খান। এতে শরীর ভালো থাকবে এবং মোটাও হবেন না।ছোট প্লেটে খাবার খান। এতে বেশি খাওয়ার সম্ভাবনা কমে যাবে। প্রতিবেলা খাওয়ার পর এক কাপ চা(দুধ, চিনি ছাড়া) পান করুন।রাত ৮টার পর খাবার না খাওয়াই উচিত।জুসের পরিবর্তে বেশি করে মৌসুমি টকজাতীয় ফল খাবেন।নিয়মিত ব্যায়াম করুন।খাবারে পর্যাপ্ত সালাদ যোগ করুন।
কাজের ফাঁকে হাঁটাহাঁটি করুন, নিজের কাজগুলো নিজেই করুন। অফিসে বা বাসায় এক টানা বসে থাকবেন না। লিফট বাদ দিয়ে সিঁড়িতে যান। সিড়িঁতে চলার সময় দ্রুত উঠুন ও দ্রুত নামুন। প্রচুর হাসুন, খোশমেজাজে থাকুন। দিনে ১৫ মিনিটের হাসিতে সপ্তাহে ২৮০ ক্যালোরি ক্ষয় হয়।
বিষণ্ণ মানুষ বেশি খেয়ে থাকে। খাবারের ক্যালোরি হিসেব করে খান। একটি ডায়েরি রাখতে পারেন হিসাবের সুবিধার জন্য। সেলফোনেও আজকাল অনেক অ্যাপ পাওয়া যায় এই কাজে সহায়তার জন্য। টেলিভিশন দেখতে দেখতে খাওয়ার অভ্যাস বাদ দিন। এতে বেশি খাওয়া হয়ে যায়।একা ব্যায়াম করার বদলে কয়েকজন মিলে একসাথে ব্যায়াম করুন। এতে ব্যায়াম বেশি করা হয়, উৎসাহ থাকে, ওজনও বেশি কমে।সেহেরি বা সকালের নাশতা বাদ দেবেন না।
দিন ঘুম বাদ দিন: রাতে ৮ ঘন্টা ঘুমানো খুবই দরকার। কিন্তু কখনই দিনের বেলায় ঘুমাবেন না। এতে মোটা হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়।
ওজন কমানোর জন্য যেসকল ব্যায়াম আপনি করবেন। হালকা ব্যায়াম থেকে আস্তে আস্তে ভারী ব্যায়ামের অভ্যাস করুন। অল্প ব্যায়ামও আপনার দেহের অনেক উপকার আনতে পারে। প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট শারীরিক পরিশ্রম করুন। যদি একটানা ৩০ মিনিট শরীরচর্চা না করতে পারেন, তাহলে ১০ মিনিট করে দিনে তিনবার করুন।প্রথম দিকে টানা ৩০ মিনিট পরিশ্রম করা আপনার জন্য খুব কষ্টসাধ্য হতে পারে।তাই ব্যায়ামের সময় কিছুক্ষণ বিরতি নিন। খুব ভালো হয়, যদি প্রতিদিন অল্প অল্প করে শারীরিক পরিশ্রমের অভ্যাস করা যায়। সপ্তাহে অন্তত তিন দিন দৈহিক শ্রমের অভ্যাস করুন। এমন কিছু দিয়ে শুরু করুন, যা আপনার জীবনধারার সঙ্গে মানিয়ে যায়।
বিকল্প হিসেবে ২০ থেকে ৩০ মিনিট সাঁতার কাটা, সাইকেল চালানো বা টেনিস খেলার কথা চিন্তা করতে পারেন।শারীরিক শ্রমের জন্য নিয়মতান্ত্রিকতা মেনে চলুন।
প্রতিদিন কীভাবে কাজের হিসাব করবেন, তা নির্ধারণ করুন
সকাল…
♦ একটা স্থির বাইসাইকেল ব্যবহার করুন, যখন আপনি খবরের কাগজ পড়েন।
♦ বিছানার পাশে একজোড়া হাঁটার জুতা বা কেডস আর কাপড় রাখুন। অন্য কাজের আগেই সকালে উঠে একটু হেঁটে আসুন।
সারা দিনে..
♦ বাগান করা, গাড়ি/ঘর পরিষ্ককার করা, কাপড় ধোয়া, আপনার পছন্দমতো যেকোনো কাজ।
♦ বাড়ির বাঁধাধরা কাজ ফেলে একটু হেঁটে আসুন, এতে আপনার মনে প্রশান্তি আসবে।
♦ নিজের কাজ নিজে করুন। ব্যাগ নেওয়া বা অন্য কিছুতে অন্যের সাহায্য নেবেন না।
♦ গাড়ির জন্য দরজায় দাঁড়িয়ে থাকবেন না। বরং গাড়ি পর্যন্ত হেঁটে যান।
♦ অফিসে সারা দিন টেবিলে বসে থাকবেন না। প্রতি দুই ঘণ্টা অন্তর পাঁচ মিনিট হাঁটাহঁটি করুন।
♦ লিফট বা এসকেলেটরের বদলে সিঁড়ি ব্যবহার করুন।
♦ সম্ভব হলে অফিস শেষে হেঁটে বাড়ি ফিরুন।
♦ দৈনন্দিন জীবনধারার সঙ্গে মানানসই দৈহিক শ্রমের অভ্যাস করুন।
সন্ধ্যা…
♦ আপনার টিভি দেখার সময় নিয়ন্ত্রণে রাখুন। পরিবার-পরিজনের সঙ্গে কিছু কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখতে পারেন।
♦ সান্ধ্য ভ্রমণ আপনাকে প্রশান্তি দেবে আর সুনিদ্রা সুনিশ্চিত করবে।
ছুটির দিনে…
বন্ধু কিংবা পরিবারের লোকদের সঙ্গে কিছু ব্যস্ত সময় কাটান। যেমন হাঁটা, সাইকেল চালানো, নৌকা চালানো।
আসুন আমরা স্থূলতাকে ভয় না পেয়ে সহজভাবে একে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করি। কারণ স্থূলতা বা ওজনাধিক্য থেকে পরবর্তীতে বিভিন্ন বিশেষ করে ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, হাইপারটেনশন ইত্যাদি রোগ দেখা দিতে পারে। এক্ষেত্রে ব্যক্তির ইচ্ছার সাথে সাথে বন্ধুত্বের পরিবেশও একান্ত কাম্য।
বাড়িতে ব্যায়াম পদ্ধতি….
মনে রাখতে হবে ঘাম শরীরে রক্তকে পরিস্কার রাখে।
♦ পুশ-আপ্স করতে পারেন। এই ব্যায়াম আবার চেস্ট ও আর্ম মাসলের শক্তি বাড়ায়। মাটির ওপর উল্টো হয়ে শুয়ে পড়ুন। তারপর দুই হাতের সাহায্যে মাটি থেকে ওঠার চেষ্টা করুন। লক্ষ রাখবেন যেন আপনার হাঁটুতে ভাঁজ না পড়ে। শুরুতে ৫ থেকে ১০ পুশ আপ্স দেয়ার চেষ্টা করুন। সকালে এক সেট এবং বিকেলে এক সেট পুশ-আপ্স করতে পারেন।
♦ পেটের মাসলের স্ট্রেংথ বাড়ানোর জন্য সিট-আপস জাতীয় ব্যায়াম করতে পারেন। মাটিতে সোজা হয়ে শুয়ে পড়ুন। দুই হাঁটু ভাঁজ করুন। ডান হাত বা কাঁধের ওপর এবং বাঁ হাত ডান কাঁধের ওপর রাখুন। এরপর আস্তে আস্তে শরীরের ওপরের অংশ মাটি থেকে তোলার চেষ্টা করুন। মাঝামাঝি অবস্থানে যেতে কয়েক সেকেন্ড থাকুন। পরে ক্রমশ শোয়া অবস্থায় ফিরে যান। শুরুতে ৩ থেকে ৫টা সিট-আপ্স যথেষ্ট হবে।
নিয়মিত হাঁটতে হবে:রিক্সায় না চড়ে পায়ে হেটেঁ গন্তব্যে গমন করার চেষ্ঠা করুন। হাঁটা সবচেয়ে ভালো।দিনে মাত্র ১৫ মিনিট জোরে জোরে হাঁটলে ১৬০ গ্রাম ক্যালোরি খরচ হয়। তাই খুব দ্রুত গতিতে হাঁটা প্রয়োজন। আরাম করে হাঁটলে/জগিং করলে ক্যালোরি খুব কম খরচ হয়।
খুব বেশী ঘুমানো অথবা খুব কম ঘুমানো : যারা দিনে পাঁচ ঘন্টা অথবা এর চেয়ে কম ঘুমায় এবং আট ঘন্টা অথবা এর চেয়ে বেশী ঘুমায় তাদের মুটিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
খুব দ্রুত আহার করা : পাকস্থলী অন্তত ২০ মিনিট সময় নেয় মস্তিষ্ককে জানানোর জন্য যে যতটুকু খাওয়া হয়েছে তা শরীরের জন্য যথেষ্ট কিনা । তাই মস্তিষ্ককে সময় দেয়া উচিত । খুব দ্রুত খেয়ে নেয়ার মধ্যে কোন বীরত্ব নেই । বরংচ নিজের শরীরেরই ওজন বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
খুব বেশী টিভি দেখা : মাত্রাতিরিক্ত ওজনধারীদের উপর একটি সমীক্ষাতে দেখা গেছে যে, টিভি দেখার সময় ৫০ শতাংশ কমিয়ে ফেলা গড়ে প্রতিদিন ১১৯ ক্যালরী পুড়িয়ে ফেলার সমান। খাওয়ার সময় টিভি দেখা, খবরের কাগজ পড়া আর বন্ধু বা পরিবারের অন্যদের সঙ্গে গল্প করা থেকে বিরত থাকুন।
বড় প্লেটে আহার করা : এক গবেষণায় দেখা যায় যে মোটা ব্যক্তিদের একটি বড় অংশ ৯৮.৬ শতাংশ বড় আকারের প্লেটে আহার করে
বড় বড় কামড় দিয়ে আহার করে : গবেষণায় বলে, যেসব ব্যক্তি বড় কামড় দিয়ে আহার করে তারা প্রতি আহারে অপরদের তুলনায় ৫২ শতাংশ বেশী ক্যালরী গ্রহন করে
পর্যাপ্ত পরিমানে পানি পান না করা : পর্যাপ্ত পানি আপনার শরীরের সকল অংশের কাজকে সুষ্টুভাবে পরিচালনা করার জন্য খুবই দরকারি । ইংরেজীতে বলা হয়, the more you drink, the better your chances of staying thin.
খাবার ভালোভাবে চিবিয়ে খান: খাবার গেলার আগে খুব ভালো করে চিবিয়ে নিন।এতে খাবার ভালোভাবে হজম হবে, সঙ্গে পেটে গ্যাসও জমবে না।
রাতে দেরী করে খাওয়া : সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে যেসব ব্যক্তি রাত ৮টার পরে আহার করে তাদের ক্যালরী গ্রহনের পরিমান বেশী।
যা পান করবেনঃ
♦ আমাদের দেহে পানি উপকারিতা অনেক বেশি। প্রতিদিন ৭-৮ গ্লাস তরল খাবার (কমপক্ষে ৩ লিটার পানি ) শুধু আমাদের সুস্থই রাখেনা, সাথে আমাদের দেহের ত্বক ভালো রাখে এবং ওজনও রাখে নিয়ন্ত্রণে। প্রতিদিন প্রচুর পানি পান করার ফলে দেহের মেটাবলিজম বাড়ায় ও রক্তের ক্ষতিকর উপাদান প্রস্রাবের সঙ্গে বের হয়ে যায়। চিকন হওয়ার জন্য পেছনে উচ্চ মেটাবলিজম দায়ী তেমনি মোটা হওয়ার জন্য ধীর গতির মেটাবলিজম দায়ী। যারা ওজন কমাতে আগ্রহী তাদের জন্য প্রয়োজন বেশি বেশি পরিমাণ পানি পান করা পানি আমাদের দেহের হজম ক্রিয়ায় সাহায্য করে এবং আপনি যখন কাজ করেন তখন ঘামের মাধ্যমে আপনার শরীর থেকে ঘামের পাশাপাশি চর্বিও খরচ হয়। তাই বেশি করে পানি পান করুন। তাছাড়া প্রচুর পরিমানে পানি পান করলে তা আপনার বার বার ক্ষুধা লাগার সমস্যাও দূর করবে। অন্যদিকে বিপাক ক্রিয়ার উন্নতি হবে, ফলে শরীরে বাড়তি ফ্যাট জমবে না।
♦ খালি পেটে সকালে ও ঘুমানোর আগে- এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে এক চা চামচ মধুও এক পিস লেবু দিয়ে খেয়ে নিন।
♦ সোডা পান করা(এমনকি ডায়েট সোডাও) : প্রতিদিন একটি অথবা দুইটা সোডা পান আপনার মাত্রাতিরিক্ত ওজন হওয়ার সম্ভাবনা ৩৩ শতাংশ বাড়িয়ে দেয় । এমনকি ডায়েট সোডা পান করাও মোটেও উচিত না।
♦ ফলের পানীয় পান করা : সকল জুসেই প্রচুর পরিমানে শুগার থাকে এবং সেগুলো কিছুটা চটচটে টাইপের হয় যা তৈরী করা হয় অনেক বেশী পরিমান ফ্রুক্টোজ কর্ন সিরাপ থেকে যা শরীরের চিকন থাকার উপাদানগুলোকে নষ্ট করে দেয়।
♦ Green TEA :পানি একমাত্র জিনিস নয় যা হজম ক্রিয়াতে সাহায্য করে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে প্রতিদিন ৪ কাপ গ্রিন টি পানের ফলে প্রতি সপ্তাহে অতিরিক্ত ৪০০ ক্যালরি পর্যন্ত ক্ষয় করা সম্ভব। এবং গ্রিন টি-তে আছে প্রচুর পরিমানে এন্টিঅক্সিডেন্ট যা আমাদের দেহের ওজন ঠিক রাখতে সাহায্য করে। তাই প্রতিদিন গ্রিন টি অবশ্যই পান করুন।
♦ লেবু এবং আদা :লেবু এবং আদা দিয়ে তৈরি এই ডিটক্স ওয়াটার পান করতে হবে প্রতিদিন সকালে, খালি পেটে। এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে অর্ধেকটা লেবুর রস এবং ১ ইঞ্চি পরিমাণ আদা কুচি যোগ করুন। এরপর এই পানিটুকু পান করুন। নিয়ম করে ১-২ মাস পান করলে দারুণ ফলাফল পাবেন।
♦দারুচিনি: দারুচিনির স্বাদ ও সুবাস দিয়ে তৈরি ডিটক্স ওয়াটার যেমন সুস্বাদু, তেমনই উপকার। চর্বি ঝরাতে এবং মেটাবলিজম বাড়াতে তা কার্যকরী। বিশেষ করে মেদহীন পেট পেতে হলে দারুচিনির জুড়ি নেই। এক লিটার পানিতে এক টেবিলচামচ দারুচিনি গুঁড়ো বা কয়েক টুকরো দারুচিনি দিয়ে রাখুন। যত বেশি সময় রাখবেন, তত ভালো উপকারিতা পাবেন। এর সাথে আপেলের টুকরো, মধু বা গ্রিন টি যোগ করতে পারেন। এই ডিটক্স ওয়াটার অবশ্য সকালে নয়, পান করতে হবে ঘুমানোর আগে।
♦ শসা এবং পুদিনা :এই ডিটক্স ওয়াটার খুবই জনপ্রিয়। তা স্বাস্থ্যকর হবার পাশাপাশি খুবই সুস্বাদুও বটে। একটি পাত্রে পানির সাথে স্লাইস করে দিন একটি শসা এবং এক মুঠো
♦ মৌরি ভেজানো পানীয়: পানীয় টি তৈরি করতে ১:জিরা বা মৌরি ২:পানি এই জিরা টি পানিতে ভিজিয়ে রাখবেন ১২ ঘন্টা তারপর সকালে খালি পেটে এবং রাতে ঘুমানোর আগে খেয়ে নিতে হবে।এভাবে টানা ১ মাস এই পানীয় পান করলেই আপনার মেদ বা ভুরি কমে আপনি হয়ে যেতে পারেন স্লিম।
♦ পুদিনাপাতা। ২-৩ ঘণ্টা পর তা পান করুন। দিনে কয়েকবার করে পান করতে পারেন।
যা পান করবেন নাঃ
♦ ওজন কমাবার উপায় হিসেব মিষ্টিজাতীয় পানীয় একেবারে খাবেন না, এর পরিবর্তে চা অথবা কফি খাবেন।
♦ ঠাণ্ডা পানি বা কোনো রকম সফট ড্রিংকস পান করব না।অ্যালকোহল, এনার্জি ড্রিংকস, হেলথ ড্রিংকস, সফট ড্রিংকস খাবেন না।এনার্জি ড্রিংক, সফট ড্রিংক একদম বাদ দিন।
♦ ননীযুক্ত দুধ খাবেন না।
♦ মাদকজাতীয় দ্রব্যের নেশা ছেড়ে দিন।
♦মদকে না বলুন:মদ্যপান ছেড়ে দিন।মদ একেবারেই খাবেন না। বিয়ারে প্রচুর পরিমানে ক্যালোরি বর্তমান। তাই বিয়ার এবং ওয়াইন খেলেই মোটা হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে।
অসময়ে খিদে পেলে করণীয়
খিদে পেলে পপকর্ন খান: শুধুমাত্র গাড়িতে বসেই পপকর্ন খাবেন না। যখনই খিদে পাবে তখনই পপকর্ন খেতে পারেন। এটি কম ক্যালোরি যুক্ত খাবার। তাই মোটা হওয়ার সম্ভাবনাও কম।
অসময়ে খিদে পেলে হেলদি স্ন্যাক্স খান। লাঞ্চ এবং ডিনারের মাঝে ৩-৪ ঘণ্টা পর পর হেলদি স্ন্যাক্স খেতে পারেন। খুব খিদে পেলে শুকনো রুটি বা টোস্ট বিস্কুট খান।ফলও খেতে পারেন। লাউ বা অন্য সবজির রস বা সিদ্ধ শাক সবজি খেতে পারেন। বেশি রাতে কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার কম খাবেন।
ওজন কমানোর বিশেষ ডায়েট চার্ট
প্রতিদিন তিনবার খাবার খান:প্রতিদিন তিন বেলা খাওয়ার অভ্যাস করুন। সকালের নাশতা, দুপুর ও রাতের খাবার। কোনো বেলা খাবার বাদ দেওয়া ঠিক নয়। কারণ, এতে আপনি এমন ক্ষুধার্ত হবেন যে পরবর্তী খাওয়ার সময় অতিরিক্ত খাবার খেয়ে ফেলবেন। এ ছাড়া দুবার খাবারের মধ্যে সময়ের পার্থক্য বেড়ে গেলে শরীরের বিপাকীয় প্রক্রিয়া কমে আসে।তাই নিয়মিত খাবার গ্রহণ করুন।
কতটুকু চর্বি আমাদের খাওয়া উচিত: খাবারের চর্বি কমানোর অনেক পদ্ধতি আছে। অধিকাংশ খাদ্য সংস্থা প্রতিদিনের খাবারে ৩০ শতাংশের বেশি চর্বি অনুমোদন করে না।
কমচর্বি অথবা চর্বিবিহীন খাবার খাওয়া : কমচর্বি অথবা চর্বিবিহীন খাবার খাদ্যকে অল্প পরিমান কম সক্রিয় শর্করার সাথে কিছু অক্ষতিকর চর্বিতে প্রতিস্থাপন করে ; যা খুব দ্রুত পরিপাক হয়ে যায়, সুগার বাড়িয়ে দেয় এবং যার ফলে খুব তাড়াতাড়ি ক্ষুধা লাগে । এর ফলে আপনার খাদ্যের চাহিদা আরো বেড়ে যায়।
অতিরিক্ত স্থুলতা দুরীকরনের কৃত্রিম উপায় সমুহঃ
অনেকেই ভাবেন, ওজন কমানোর বিশেষ একটি ট্যাবলেট (Tablet) থাকলে মন্দ হতো না। একটি ট্যাবলেট খেয়েই ঝরিয়ে ফেলা যেত অনেকটা মেদ এবং ওজন। বাস্তবে তেমন কোনো ট্যাবলেট নেই বটে। তবে যারা বলে ৭ দিনে বা ১০ দিনে স্থূলতা কমিয়ে দেবে, নয়তো টাকা ফেরত- সেটা ধাপ্পাবাজ ছাড়া কিছুই না।তবে বর্তমানে গবেষণা চলছে। আর এ ওজন কমানোর ওষুধ তৈরি করতে ও তা সফলভাবে মানুষের উপর প্রয়োগ করতে আরও কয়েক বছর লেগে যাবে৷ ততদিন পর্যন্ত বাড়তি ওজন কমাতে খেলাধুলা করতে হবে, ফাস্ট ফুড এড়িয়ে চলতে হবে৷
ইউরোপিয়ান সোসাইটি অব এন্ডোক্রাইনোলজির (European Society of Endocrinology) সম্মেলনে প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়, যাদের শরীরে ভিটামিন ডি কম, তাদের পেটে মেদ বেশি জমতে দেখা যায়। গবেষকরা প্রায় ৭ হাজার মানুষের ওপর গবেষণায় এ ফলাফল পান। যদিও এ গবেষণায় শরীরের মেদ এবং ভিটামিন ডি এর মাঝে সম্পর্ক পাওয়া গেছে, বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ওজনের সাথেও ভিটামিন ডি এর সম্পর্ক একই রকম। ভিটামিন ডি এর অভাব শুধু যে পেটে মেদ জমার জন্য দায়ী, তা নয়।
ইদানিং একটি ভিটামিন আছে যা আপনার পেটের মেদ কমাতে অনেকটাই কাজ করবে। এই ভিটামিনকে অনেকেই ‘সানশাইন ভিটামিন’ বলে চেনেন। তা হলো ভিটামিন ডি। ভিটামিন ডি হাড় মজবুত রাখে এবং ক্যান্সার ও ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করে, এটা জানা কথা। কিন্তু তা ওজন কমাতে পারে এটা খুব কম মানুষই জানেন।ভিটামিন ডি ট্যাবলেট বা ক্যাপসুল খেতে পারেন, কিন্তু অবশ্যই ডাক্তারের সাথে কথা বলে নিন।
ভিটামিন ডি সাধারণ মাল্টিভিটামিনের (Multivitamin) মতো খাওয়া যাবে না। এই ভিটামিন অতিরিক্ত খেলে আপনার ক্ষতি হতে পারে। এমনকি তা শরীরে জমা হতে পারে এবং তৈরি করতে পারে কিডনি স্টোন। এসব কারণে প্রাকৃতিক উৎস থেকে ভিটামিন ডি গ্রহণ করাই ভালো।
প্রতিদিন ২০-২৫ মিনিট ত্বকে সূর্যের আলো পড়লে তা শরীরের জন্য যথেষ্ট ভিটামিন ডি তৈরি করে। কিন্তু এতটা সময় বাইরে কাটানো সবার জন্য সম্ভব হয় না। এক্ষেত্রে প্রতিদিনের ডায়েটে ভিটামিন ডি ফর্টিফাইড দুধ, কমলার রস অথবা সিরিয়াল যোগ করতে পারেন। এছাড়াও নিয়মিত খেতে পারেন ডিম, কড লিভার অয়েল ও মাশরুম। এসব খাবার ভিটামিন ডি এর প্রাকৃতিক উৎস।
যে কাজ গুলো অবশ্যই করবেন
সূর্যোদয়ের আগে ঘুম থেকে উঠা উচিত।মুখ ধুয়েই এক থেকে দুই গ্লাস পানি পান করে সকালের প্রার্থনা সেড়ে দিনের প্রস্তুতি নেওয়া উচিত।
ঘর মুছুন: নিজের কাজ নিজে করবেন। বাড়ির কাজ করুন। যেমন ঘর মুছলে সব থেকে বেশি ক্যালোরি নষ্ট করা যায়। রোগা হওয়ার জন্য এই পদ্ধতিতে শরীর সস্থ রাখা খুবই সহজ ব্যাপার। এর ফলে ৪২ শতাংশ ক্যালোরি নষ্ট করা সম্ভব।
যে ভূল গুলো করা যাবে না
মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পড়া যাবে না। তবে এটা সারতে সময় লাগবে। তবে যারা বলে ৭ দিনে বা ১০ দিনে স্থূলতা কমিয়ে দেবে, নয়তো টাকা ফেরত- সেটা ধাপ্পাবাজ ছাড়া কিছুই না।তবে বর্তমানে গবেষণা চলছে। আর এ ওজন কমানোর ওষুধ তৈরি করতে ও তা সফলভাবে মানুষের উপর প্রয়োগ করতে আরও কয়েক বছর লেগে যাবে৷ ততদিন পর্যন্ত বাড়তি ওজন কমাতে খেলাধুলা করতে হবে, ফাস্ট ফুড এড়িয়ে চলতে হবে৷ কোনো চটকদারি বিজ্ঞাপনের প্রতি মোটেও আস্থা রাখা যাবে না।
খাবার বাদ দেবেন না:না খেয়ে কিন্তু ওজন কমানো যায় না। তাই কোনো বেলার খাবারকে বাদ দেওয়া যাবে না। দিনে অন্তত ছয়বার খান। তিনবেলা বড় খাবার ও তিনবেলা ছোট খাবার—এভাবে খাবারকে ভাগ করুন। একেবারে খুব বেশি না খেয়ে অল্প পরিমাণ খাবার খান।সারাদিনের প্রত্যেকটা খাবার খাবেন, বাদ দেবেন না। এমনকি ব্রেকফাস্ট খাওয়াও প্রয়োজন অবশ্যই। পেট দীর্ঘক্ষণ খালি রাখবেন না। এতে মেটাবলিজম কমে যাবে ও ওজন বাড়বে।
মনে রাখবেন, অনেকে মেদ কমাতে গিয়ে খাওয়া একেবারেই কমিয়ে দেন। এতে প্রয়োজনীয় শক্তির অভাবে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। তাই ঢালাওভাবে সব খাবার না কমিয়ে প্রথমে তেল ও চর্বিযুক্ত খাবার কমান, এরপর ধীরে ধীরে অন্যান্য খাবার কমাবেন। তবে অবশ্যই নির্দিষ্ট মাত্রায়।
আশা করি এ লেখাটি আপনার ভাল লাগবে এবং আপনার মূল্যবান বক্তব্য কমেন্টস (Comments) এর মাধ্যমে প্রদান করে আমাদের ভুলত্রুটি সংশোধনের সুযোগ করে দিবেন।
ধন্যবাদ ।