March 27, 2023, 3:57 pm
প্রকল্পের নাম: পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প। পদ্মা সেতু বাংলাদেশের পদ্মা নদীর উপর নির্মাণাধীন একটি বহুমুখী সড়ক ও রেল সেতু। এর মাধ্যমে মুন্সিগঞ্জের লৌহজংয়ের সাথে শরিয়তপুর ও মাদারীপুর জেলা যুক্ত হবে, ফলে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অংশের সাথে উত্তর-পূর্ব অংশের সংযোগ ঘটবে। বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশের জন্য পদ্মা সেতু হতে যাচ্ছে এর ইতিহাসের একটি সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জিং নির্মাণ প্রকল্প। দুই স্তর বিশিষ্ট স্টিল ও কংক্রিট নির্মিত ট্রাস ব্রিজটির (truss bridge) ওপরের স্তরে থাকবে চার লেনের সড়ক পথ এবং নিচের স্তরটিতে থাকবে একটি একক রেলপথ। পদ্মা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা নদীর আববাহিকায় ১৫০মিটার দৈর্ঘ্যর ৪১টি স্পান বসবে, ৬.১৫০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য এবং ১৮.১০ মিটার প্রস্থ পরিকল্পনায় নির্মিত হচ্ছে দেশটির সবচেয়ে বড় সেতু। সরকারের পরিকল্পনামাফিক ২০২০ সালের শেষের দিকে এটি যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়ার কথা । পদ্মা সেতু নির্মাণকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি জানিয়েছে, পদ্মা সেতু যান চলাচলের উপযোগী হতে ২০২২ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত লেগে যাবে।
প্রকল্পের নাম: পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প।
পদ্মা সেতু প্রস্থ: ৭২ ফুট।
পদ্মা সেতুর দৈর্ঘ:৬.১৫ কিলোমিটার
# পদ্মা সেতুর পাইলিং গভীরতা: ৩৮৩ ফুট।
#পদ্মা সেতুর মোট পাইলিংয়ের সংখ্যা: ২৮৬ টি
# সুবিধা: লাজধানীর সঙ্গে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ২১টি জেলার সরাসরি সড়ক যোগাযোগ তৈরি হবে।
# মোট পিলারের সংখ্যা: ৪২ টি, স্প্যানের সংখ্যা ৪১ টি।
# প্রতিটি স্প্যানের দৈর্ঘ্য: ১৫০ মিটার
# পানির স্তর থেকে পদ্মা সেতুর উচ্চতা: রয়েছে ৬০ফুট।
# সেতুর সংযোগ সড়ক: দুই প্রান্তে (জাজিরা ও মাওয়া) ১৪ কিলোমিটার
# প্রকল্পের নদীশাসনের হয়েছে দুই পাড়ে ১২ কিলোমিটার।
# কাজ করছে প্রায় ২০ হাজার প্রকৌশলী-শ্রমিক।
# পদ্মা সেতু প্রকল্পে নদীশাসনে ব্যয় হয়েছে ৮ হাজার ৭০৭ কোটি ৮১ লাখ টাকা।
# পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল ২০১৪ সালে।
# নদীশাসনের কাজও শুরু হয় ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে।
# প্রথম স্প্যান বসানো হয়েছিল ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৭ সালে।
# ১০ ডিসেম্বর বেলা ১২ টার দিকে ৪১তম স্প্যানটি সেতুর ১২ ও ১৩ নম্বর পিলারের ওপর বসানো হয়।
# ৪১ তম স্প্যানটির ওজন: ৩২০০ টন।
# প্রতিটি স্প্যানের দৈর্ঘ্য: ১৫০ মিটার
# জাজিরা প্রান্তে বসানো হয়েছে: ২০ টি স্প্যান
# মাওয়া প্রান্তে বসানো হয়েছে: ২০টি স্প্যান।
#মাওয়া ও জাজিরা প্রান্তের মাঝখানে: একটি স্প্যান বসেছে ।
# পদ্মা সেতুর স্প্যান বহনকারী ক্রেনের নাম: তিয়ান-ই
# পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হবে: ২০২২ সালের জুন মাসে।
# সেতুটি নির্মিত হলে দেশের মোট জিডিপি বাড়বে: ১.১৩% পর্যন্ত বাড়বে। আর দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জিডিপি বাড়বে ২.৩%
পদ্মা সেতুতে মোট সড়ক লেনের সংখ্যা: ৪টি। মাঝখানে থাকবে রোড ডিভাইডার।
পদ্মা সেতুর ফলে দারিদ্র্যতা কমবে: প্রতিবছর শূন্য দশমিক ৮৪ শতাংশ হারে (০.৮৪%)।
পদ্মা সেতু প্রকল্পে মোট ব্যয়: ৩০ হাজার ৭৯৩ কোটি ৩৯ লাখ (মূল সেতুতে) টাকা।
পদ্মা সেতুর কাজে ভূমি অধিগ্রহণ হয়েছে: মোট ভূমি অধিগ্রহণ করতে হয়েছে ২ হাজার ৬৯৮ হেক্টর।
পদ্মা সেতুর ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করেন: পদ্মা সেতু নির্মানের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (৪ঠা জুলাই ২০০১ খ্রি.)।
পদ্মা সেতুর ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপনের তারিখ: ৪ঠা জুলাই ২০০১ খ্রি. তারিখে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
পদ্মা সেতু নির্মাণের পরামর্শ দেয়: ২০০৪ সালে মাওয়া-জাজিরা প্রান্তে পদ্মা সেতু নিমার্নের পরামর্শ দেয় জাপানের দাতা সংস্থা জাইকা।
পদ্মা সেতুর নির্মাণ ও নদীশাসনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে মূল সেতুর নির্মাণ ও নদীশাসন কাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
পদ্মা সেতুর নির্মাণের অনুমোদিত ব্যয়: ২০১৭ সালের একনেক ১০হাজার ১৬১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি অনুমোদন দিয়েছিল।
পদ্মা সেতুর নির্মাণের প্রকল্প পাস করেছিল: ২০০৭ সালের ২৮ আগস্ট ১০ হাজার ১৬১ কোটি টাকার বহুল আলোচিত প্রকল্প পস করেছিল তত্ত¡াবধায়ক সরকার। পরে আওয়ামী লীগ সরকার এতে রেলপথ সংযুক্ত করে।
# ২০১৮ সালে এর ব্যয় আরও ১৪শ কোটি টাকা বাড়ে। ফলে প্রকল্পটি সংশোধন না করে ব্যয় বাড়িয়ে করা হয় ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা।
# পদ্মা সেতুর ধরণ দ্বিতলবিশিষ্ট। এই সেতু কংক্রিট আর স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে (যা বিশ্বে প্রথম)
# পদ্মা সেতু নির্মাণে চুক্তিবদ্ধ কোম্পানির নাম চায়না রেলওয়ে গ্রæপ লিমিটেডের আওতাধীন চায়না মেজর ব্রিজ কোম্পানি।
# দুই স্তরবিশিষ্ট স্টিল ও কংক্রিট নির্মিত ট্রাস ব্রিজটির ওপারের স্তরে রয়েছে চারলেনের সড়কপথ এবং নিচের স্তরটিতে রয়েছে একটি একক রেলপথ।
# পদ্মা সেতুতে যানবাহন চলাচলের পথটি হবে ২২ মিটার চওড়া, চারলেনের।
# পদ্মা সেতু নির্মাণে বিশ্বরেকর্ডের সংখ্যা তিনটি- (এক) প্রথম রের্কড হচ্ছে সেতুর পাইলিং নিয়ে। পদ্মা সেতুর খুঁটির নিচে সর্বোচ্চ ১২২ মিটার গভীরে স্টিলের পাইল বসানো হয়েছে। এসব পাইল তিন মিটার ব্যাসার্ধের। এসব এখনও পর্যন্ত কোনো সেতুর জন্য এত গভীরে পাইলিং প্রয়োজন হয়নি। (দ্বিতীয়) দ্বিতীয় রের্কড হলো ভ‚মিকম্পের বিয়ারিং সংক্রান্ত। এই সেতুতে “!“ফ্রিকশন পেন্ডুলাম বিয়ারিংয়ের” সক্ষমতা হচ্ছে ১০ হাজার টন। এখন পর্যন্ত কোনো সেতুর জন্য এত গভীরে পাইলিং প্রয়োজন হয়নি। রিখটার স্কেলে ৯ মাত্রার ভূমিকম্পে টিকে থাকার মতো করে পদ্মা সেতু নির্মাণ হচ্ছে। (তৃতীয়) তৃতীয় রেকর্ড নদীশাসন সংক্রান্ত। নদীশাসনে চীনের ঠিকাদার সিনোহাইড্রো করপোরেশনের সঙ্গে ১১০কোটি মার্কিন ডলারের (প্রায় ৯ হাজার ৩৫০ কোটি টাকা ) চুক্তি হয়েছে। এর আগে নদীশাসনের এককভাবে এত বড় দরপত্র হয়নি।
# নদীর পানি থেকে প্রায় ১৮ মিটার উঁচু পদ্মা সেতুর তলা। পানির উচ্চতা যতই বাড়–ক না কেন, এর নিচ দিয়ে ৫ তলার সমান উচ্চতার যেকোনো নৌযান সহজেই চলাচল করতে পারবে।
# পদ্মা সেতু কেবল দেশের দক্ষিণ আর পূর্বাঞ্চলের সেতুবন্ধ হবে না, এই সেতু এশিয়ান হাইওয়ের রুট এএই-১ এর অংশ হিসেবেও ব্যবহার হবে।
# সেতু বিভাগ পদ্মা সেতুর চালুর পর ১৫ বছরের জন্য একটি টোল হারের তালিকা করে গত বছর। তালিকা অনুসারে, বাসের ক্ষেত্রে টোলের হার হতে পারে ২ হাজার ৩৭০ টাকা। এ ছাড়া ছোট ট্রাকের জন্য ১ হাজার ৬২০ টাকা, মাঝারি ট্রাকের ক্ষেত্রে ২ হাজার ১০০ ও বড় ট্রাকের ক্ষেত্রে ২ হাজার৭৭৫ টাকা টোল নির্ধারণের প্রস্তাব দেওয় হয়েছে। প্রতি ১৫ বছর পরপর টোলের হার ১০শতাংশ করে বাড়ানো হবে।
# পদ্মা সেতু নিমার্ণে ২০১১ সালে বিশ্বব্যংকের সঙ্গে ১২০ কোটি ডলারে ঋণ চুক্তি হলেও পরামর্শক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর বিষটি ঝুলে যায়।
পদ্মা সেতুর ধরন দ্বিতলবিশিষ্ট। এই সেতু কংক্রিট আর স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে। (যা বিশ্বে প্রথম)।
পদ্মা সেতু প্রকল্পে মোট ব্যয় (মূল সেতুতে) ৩০ হাজার ৭৯৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা।
২০১৭-১৮ অর্থবছর পদ্মা সেতু প্রকল্পে সরকারের বরাদ্দ ছিল ৫২৪ কোটি টাকা।
পদ্মা সেতু প্রকল্পে নদীশাসন ব্যয় হয়েছে ৮ হাজার ৭০৭ কোটি ৮১ লাখ টাকা।
পদ্মা সেতু নির্মাণে চুক্তিবদ্ধ কোম্পানির নাম চায়না রেলওয়ে গ্রুপ লিমিটেড এর আওতাধীন চায়না মেজর ব্রিজ কোম্পানি।
পদ্মা সেতুতে রেললাইন স্থাপন হচ্ছে স্প্যানের মধ্য দিয়ে।
পদ্মা সেতুর প্রস্থ হবে ৭২ ফুট, এতে থাকবে চার লেনের সড়ক। মাঝখানে রোড ডিভাইডার।
পদ্মা সেতুর ভায়াডাক্ট ৩ দশমিক ১৮ কিলোমিটর।
পদ্মা সেতুর সংযোগ সড়ক দুই প্রান্তে (জাজিরা ও মাওয়া) ১৪ কিলোমিটার। পদ্মা সেতু প্রকল্পে নদীশাসন হয়েছে দুই পাড়ে ১২ কিলোমিটার।
পদ্মা সেতুর ভায়াডাক্ট পিলার ৮১টি।
প্রতি পিলারের জন্য পাইলিং হয়েছে ৬টি। তবে মাটি জটিলতার কারণে ২২টি পিলারের পাইলিং হয়েছে ৭টি করে।
পদ্মা সেতুর মোট পাইলিংয়ের সংখ্যা ২৮৬টি।