June 7, 2023, 10:38 pm
একজন দিশেহারা অভিভাবকের প্রশ্ন দেশে এত প্রতিষ্ঠান থাকতে কেন আবার নতুন-নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্ম?SHAYESTAGANJ PUBLIC SCHOOL·MONDAY, MARCH 23, 2020·(জবাব) খুবই সংবিধানসম্মত, যৌক্তিক, ন্যায়সংগত প্রশ্ন।
শিক্ষা সব নাগরিকের অধিকার এবং তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। সন্তানকে স্কুলে ভর্তি করাবেন। চারদিকে অনেক স্কুল আছে, কিন্তু ভালো নির্ভরযোগ্য স্কুলের অভাব খুব, তাছাড়া সরকারি স্কুল গুলোতে প্রতিযোগিতা এত বেশি যে সব মিলিয়ে সর্ব সাধারনেরা থই পাচ্ছেন না। শিক্ষার যেমন বহু ধারা, তেমনি মানের ক্ষেত্রেও আকাশ-পাতাল, ব্যয়ের ক্ষেত্রেও তাই। তাই সরকারের সাথে সহযোগী হয়ে নির্ভরযোগ্য মানের স্কুল পরিচালনার লক্ষ্যেই আমাদের ক্ষুদ্র এ প্রচেষ্টা।
তাছাড়া আপনেরা আরেকটি বিষয় লক্ষ্য করলেই দেখতে পাবেন যে সরকার বিভিন্ন সময়ে হুমকি দেয়, ডাক্তারদের ঢাকার বাইরে কাজ না করলে চাকরি থাকবে না একই ভাবে শিক্ষকদেরকে কোচিং এ জরালে চাকুরি থাকবে না। এই হুমকি দিয়ে কোনো কাজ হয়নি, হবে ও না মনে হচ্ছে । শুধু ডাক্তার নন, সরকারি কর্মকর্তা, প্রকৌশলী, শিক্ষক-প্রায় সবারই প্রবণতা ঢাকায় থাকার।
ঢাকায় পোস্টিং না নিতে পারলে তাঁদের দুটি বাড়ি নিতে হয়। একটি কর্মস্থলে নিজে থাকার, আরেকটি ঢাকায় সন্তানসহ পরিবারের থাকার জন্য।এর কারণ কী? কেন সবাই এই দূষিত, প্রায় অচল, বসবাসের অযোগ্য শহরে আসতে চায়? খুঁজলে অন্যতম যে কারণ পাওয়া যাবে, তা হলো সন্তানের জন্য স্বীকৃত মানসম্মত শিক্ষা। এ ছাড়া অবশ্যই পরিবারের চিকিৎসা, সেখানেও দৃশ্যপট একই।
তাই ঢাকা শহরকে নানা দুর্বিপাকের হাত থেকে রক্ষা করতে হলে প্রথমেই প্রয়োজন যত বড় বড় অফিস সহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে তাদের হেড অফিস ঢাকায় না রেখে গুরুত্ব অনুযায়ী বিভাগীয় শহর, জেলা শহর, উপজেলা শহর ও পৌর-শহরেগুলোতে স্থানান্তর করা বা গড়ে তোলা উচিৎ। আর এমন বিকেন্দ্রীকরণের লক্ষ্যেই নতুন-নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্ম হওয়া। আর নতুন-নতুন প্রতিষ্ঠান সৃষ্টির ফলে একই এলাকায় বা শহরে কিংবা প্রতিষ্ঠানের উপর চাপ কমবে, কাজের সুযোগ সৃষ্টি হয়। অনেকে নিজ এলাকায় থেকে কাজ করতে পারবে।
বিকেন্দ্রীকরণে সুবিধাগুলো মাথায় রেখে নতুন-নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্ম হওয়া মাত্র।আরও বিষয় লক্ষণীয় যে, এ অঞ্চলের অনেকের আর্থিক সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও সন্তানকে লেখাপড়া শেখানো জন্যে ঢাকায় বা সিলেটে পাঠান। কারণ তাদের এসব পাঠশালাতে তাদের বিশেষ চাহিদা পূরণ হচ্ছে না। আর এমন বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন জ্ঞান পিপাসূদের চাহিদা পূরনের লক্ষ্যে এমন ক্ষুদ্র প্রচেষ্টায় নতুন-নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্ম হওয়া।দেশের সীমিত আয়ের সব শ্রেণির মানুষের কাছে এখন প্রধান অগ্রাধিকার শিক্ষা লাভ করণ। ধারকর্জ করে, আয় বাড়ানোর নানা পথ অনুসন্ধান আর অসম্ভব পরিশ্রম করে সন্তানকে পড়ানোর জন্য তাঁরা প্রাণপাত করেন। দরিদ্র শ্রমজীবী মানুষের মধ্যেও চেষ্টার কমতি নেই।
হয়তো তাঁদের ভেতরে প্রবল বিশ্বাস, এই শিক্ষা দিয়েই বর্তমান দুষ্টচক্র থেকে মুক্তি সম্ভব হবে। এই সম্মিলিত ইচ্ছা পূরনে লক্ষ্যে নতুন-নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্ম হওয়া।তাছাড়া আরেকটা বিষয় লক্ষ্য করে দেখতে পারবেন যে, অনেক স্কুলে মেধাবী যাচাই করে ভর্তি করে, যাতে স্কুলের রিপোর্ট ভাল হয়। কিন্তু এটা স্কুলের কাজ নয়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা স্কুলের কাজ হলো অমেধাবীকে মেধাবী করা।
আর এমন ধারণা বাস্তবায়নের লক্ষ্যেই নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে সদ্য স্থাপিত হওয়া শাযেস্তাগঞ্জ পাবলিক স্কুলের ক্ষুদ্র এ প্রচেষ্টা।