April 1, 2023, 5:21 am
স্বেচ্ছায় মৃত্যুকে যারা বেছে নিতে চান তাদের জন্য এটি একটি ‘সুখবর’ বটে! আত্মহত্যার বিষয়টি আমাদের সকলের জানা। কারও সঙ্গে অভিমান করে বা হতাশাগ্রস্থ হয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন অনেকেই। আবার এমন মানুষও আছেন যারাদীর্ঘ যন্ত্রণাময় অসুস্থতার কবল হতে রক্ষা পেতে স্বেচ্ছায় মৃত্যুকে বেছে নিতে বাধ্য হন। স্বইচ্ছায় মৃত্যু কামনা করা এইসব ব্যক্তির আত্মহত্যার পথ আরও সহজ করতে আসছে ‘সারকো’ নামে এক বিশেষ ধরনের যন্ত্র।
এখন মনে হয় সবার প্রশ্ন সারকো যন্ত্র আসলে কি? কেন উদ্ভাবন করা হলো?
সারকো হলো কফিন আকৃতির কৃত্রিম উপায়ে অক্সিজেন ও কার্বন ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ কমিয়ে এক মিনিটেরও কম সময়ের মধ্যে মৃত্যু ডেকে আনা সম্ভব ।আর যন্ত্রের নাম দেওয়া হয়েছে ‘সারকো’।
এই যন্ত্রটি তৈরি করেছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘এগজিট ইন্টারন্যাশনাল’ । ‘ডক্টর ডেথ’ হিসেবেও পরিচিত সংস্থাটির প্রধান ফিলিপ নিটশে রয়েছেন এই যন্ত্রের উদ্ভাবনের নেপথ্যে।
তাহলে প্রশ্ন সারকো যন্ত্র দিয়ে কি স্বাভাবিক মৃত্যু সম্ভব?
সংস্থাটির প্রধান যন্ত্রটির কর্মপদ্ধতি সম্পর্কে জানান, মৃত্যুর প্রত্যাশায় যে ব্যক্তি ওই যন্ত্রের ভেতর ঢুকবেন, তিনি নিজেও যন্ত্রটি চালাতে পারবেন। আবার বাইরে থেকেও যন্ত্র নিয়ন্ত্রণ করার পাশাপাশি ভেতর থেকেও তা চালু করা যাবে।
তবে সমস্যা হলো–মরণেচ্ছু ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে সাধারণত দেখা যায়, এই পরিস্থিতিতে তারা অচেতন হয়ে পড়েন। পেশিশক্তি ব্যবহার করে কোনো কাজ করার মতো পরিস্থিতি তাদের বেশিরভাগেরই থাকে না। এই যন্ত্রে তার সমাধান করা হয়েছে বলে দাবি সংস্থাটির। এগজিট ইন্টারন্যাশনালের দাবি, ওই পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে শুধুমাত্র চোখের পাতার নড়াচাড়া আঁচ করেই যন্ত্রটি সংকেত গ্রহণ করতে পারবে।
সংস্থা আরো জানিয়েছে, আপনার যেখানে প্রয়োজন সেখানেই নিয়ে যাওয়া যাবে সারকোকে। মূল মেশিন থেকে সারকোকে আলাদা করলে তা দেখতে হবে অনেকটা কফিনের মতো। সেই কফিনে এক বার শুয়ে পড়লেই সব শেষ!
সংস্থাটি আরো জানিয়েছে, বিশেষ ক্ষেত্রে সুইজারল্যান্ডে আত্মহত্যায় সহায়তা প্রদান করা আইনিভাবে বৈধ। সূত্রের খবর, গত বছর অন্তত এক হাজার ৩০০ মানুষ এই প্রক্রিয়ার সাহায্য নিয়েছেন। সংস্থার দাবি, এবার আইনি বৈধতা পেল আত্মহত্যা করার যন্ত্র ‘সারকো’।
‘ডক্টর ডেথ’ চিকিৎসক ফিলিপ বলছেন, আগামী বছরের মধ্যে সারকো ব্যবহারের উপযোগী হয়ে যাবে সুইজারল্যান্ডে। এখন পর্যন্ত এই প্রকল্পে বহু অর্থব্যয় হয়েছে। কিন্তু আমাদের আশা, আমরা প্রয়োগের খুব কাছাকাছি পৌঁছে গেছি।
তবে যন্ত্র নিয়ে সমালোচনাও কম হচ্ছে না। অনেকে বলছেন, এই যন্ত্রটি আসলে গ্যাস চেম্বারকে মহিমান্বিত করার চেষ্টা ছাড়া আর কিছুই নয়। অনেকের মতে, এই যন্ত্রের মাধ্যমে প্রকৃতপক্ষে আত্মহত্যাকে সব ক্ষেত্রে মান্যতা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।