1. mahfujpanjeree@gmail.com : Mahfuzur-Rahman :
  2. admin@samagrabangla.com : main-admin :
  3. mahmudursir@gmail.com : samagra :

বিষধর সাপ রাসেল ভাইপার থেকে সাবধান!

  • Update Time : শুক্রবার, জুন ১১, ২০২১

এমনই একটি ভয়ঙ্কর বিষধর সাপ রাসেল ভাইপার (Russell’s Viper)। বৈজ্ঞানিক নাম উধনড়রধ Daboia Russelii. স্থানীয়ভাবে চন্দ্রবোড়া বা উলু বোড়া নামে পরিচিত হলেও রাসেল ভাইপার নামেই অধিক পরিচিত। এরা ভাইপারিডি পরিবারভুক্ত।

আইইউসিএনের ২০১৫ সালের লাল তালিকা অনুযায়ী রাসেলস ভাইপার বাংলাদেশে সংকটাপন্ন প্রাণীর তালিকায় রয়েছে। অন্যান্য সাপ মানুষকে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করলেও এ সাপটি স্বভাব ঠিক তার উল্টো, নিজে থেকে ছুটে এসে আক্রমণ করে এই বিষধর সাপটি। । তাই প্রতিবছরই উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষ কেবল এ সাপটির কামড়েই প্রাণ হারান। আক্রমণের ক্ষিপ্র গতি ও বিষের তীব্রতার কারণে ‘কিলিংমেশিন’ হিসেবে বদনাম রয়েছে সাপটির।

এর দাঁত অনেক গভীর ও সূঁচালো। বিষ প্রয়োগে সময় নেয় এক সেকেন্ডের ১৬ ভাগের একভাগ। কামড়ের ক্ষিপ্রগতির দিক দিয়ে সব সাপকে হারিয়ে রাসেল ভাইপার প্রথম স্থান দখল করেছে। তাছাড়া এ সাপটির বিষ দাঁত বিশ্বে দ্বিতীয় সর্ববৃহৎ। এই সাপের বিষ ‘হেমোটক্সিন’ হওয়ায় মাংস পঁচেই আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যু হয়। এ সাপের কোনো অ্যান্টিভেনম বাংলাদেশে পাওয়া যায় না। সাপটির বিষক্রিয়ায় রক্ত জমা বন্ধ হয়ে যায়; ফলে অত্যধিক রক্তক্ষরণে দীর্ঘ যন্ত্রণার পর মৃত্যু হয়।

সাপ দু-তিন ফুট লম্বা হয়। অন্যান্য সাপ যেখানে সর্বোচ্চ ২০ থেকে ৩০টি ডিম পাড়ে, সেখানে এই সাপটি বছরে দুবার ডিম তো পাড়েই না বরং একসঙ্গে ৬০ থেকে ৮০টি বাচ্চা ফুটায়!

এদের দেহ মোটাসোটা, লেজ ছোট ও সরু। এরা নিচু জমির ঘাসযুক্ত উন্মুক্ত পরিবেশ ছাড়াও এরা কিছুটা শুষ্ক পরিবেশেও বাস করে। এরা নিশাচর, এরা খাদ্য হিসেবে ইঁদুর, ছোট পাখি, টিকটিকি ও ব্যাঙ খেয়ে থাকে। এরা প্রচণ্ড জোরে হিস হিস শব্দ করতে পারে।

পৃথিবীতে প্রতিবছর যত মানুষ সাপের কামড়ে মারা যায়, তার উল্লেখযোগ্য একটি অংশ এই সাপের কামড়ে মারা যায়। এদের বিষদাঁত বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বৃহৎ। এই সাপ কামড় দিলে মানুষের মাংস পচে যায়।

আরও পড়ুন: সাপে কামড়ের চিকিৎসা কিভাবে করতে হয়।

অন্যান্য সাপ শিকারের সময় শিকারকে কামড় দিয়ে সাথে সাথে খেয়ে ফেলে কিন্তু হিংস্র এই সাপটি শিকারকে শুধু একা নয়, তার পুরো পরিবারসহ খেতে ভালোবাসে। তাই অন্যান্য সাপ যেমন একটি ইঁদুরকে কামড় দিয়ে সাথে সাথে খেয়ে ফেলে, এটি সে ক্ষেত্রে কামড় দিয়ে ছেড়ে দেয়। প্রচণ্ড বিষের যন্ত্রণায় ইঁদুর যখন তার গর্তের দিকে ছুটে চলে তখন এই সাপটি তার পিছু পিছু গিয়ে সে গর্তে ঢুকে সব ইঁদুরকে খেয়ে ফেলে। বিশেষ করে নদীর অববাহিকায় এবং চর এলাকায় এখন এই সাপটির জন্য উপযুক্ত বংশবৃদ্ধির স্থান।

সাপটির নাম রাসেল ভাইপার। যেটিকে চন্দ্রবোড়া বা উলু বোড়াও বলা হয়। বাংলাদেশে শঙ্খিনী সাপ কমে যাওয়ায় রাসেল ভাইপারের প্রাকৃতিক প্রজনন বেড়ে গেছে। শঙ্খিনী সাপের মূল খাদ্যই ছিলো এই সাপটি।

রাসেল ভাইপার বাংলাদেশের দুর্লভ সাপ হলেও সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থানে এই সাপটি দেখা যাচ্ছে। মনে করা হচ্ছে বন্যার কারণে ভারত থেকে প্রচুর পরিমাণে এই সাপটি বাংলাদেশে চলে এসেছে। এটি ইঁদুর ও টিকিটিকি খায়।

রাসেল ভাইপার সাপের কামড়ে অসুস্থ রোগীদের চিকিৎসার জন্য বাংলাদেশে একমাত্র রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেই একটি যন্ত্র দেওয়া হয়েছে। তবে যন্ত্রটি চালানোর জন্য প্রতি ৭২ ঘণ্টায় একটি করে সার্কিটের প্রয়োজন পড়ে। সেটির দাম ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা। সরকারিভাবে এই সার্কিটের কোনো সরবরাহ নেই।

তথ্যটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে শেয়ার করুন

More News Of This Category